নহিমিয়া 8
হযরত উযায়ের (আঃ) তৌরাত শরীফ তেলাওয়াত করলেন
1সপ্তম মাসের আগে সমস্ত লোক একসংগে মিলে পানি-দরজার সামনের চকে জমায়েত হল। তারা আলেম উযায়েরকে বনি-ইসরাইলদের জন্য মাবুদের দেওয়া শরীয়ত, অর্থাৎ তৌরাত কিতাব নিয়ে আসতে বলল।
2সপ্তম মাসের প্রথম দিনে ইমাম উযায়ের স্ত্রী-পুরুষ এবং যারা শুনে বুঝতে পারে এমন সব লোকদের দলের সামনে তৌরাত কিতাব নিয়ে আসলেন। 3পানি-দরজার সামনের চকের দিকে মুখ করে স্ত্রী-পুরুষ ও অন্যান্য যারা বুঝতে পারে তাদের কাছে তিনি ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত তা তেলাওয়াত করে শোনালেন, আর সমস্ত লোক মন দিয়ে তৌরাত কিতাবের কথা শুনল।
4কিতাবটি তেলাওয়াত করবার জন্য কাঠের যে মঞ্চ তৈরী করা হয়েছিল তার উপর আলেম উযায়ের গিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। তাঁর ডান পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন মত্তিথিয়, শেমা, অনায়, উরিয়া, হিল্কিয় ও মাসেয়; আর তাঁর বাঁ পাশে ছিলেন পদায়, মীশায়েল, মল্কিয়, হশুম, হশবদ্দানা, জাকারিয়া ও মশুল্লম।
5তারপর উযায়ের কিতাবটি খুললেন। সব লোক তাঁকে দেখতে পাচ্ছিল, কারণ তিনি তাদের থেকে উঁচুতে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তিনি কিতাবটি খুললে পর সব লোক উঠে দাঁড়াল। 6তখন উযায়ের মাবুদ আল্লাহ্তা’লার প্রশংসা করলেন, আর সমস্ত লোক তাদের হাত তুলে বলল, “আমিন, আমিন।” তারপর তারা সেজদা করে মাবুদের এবাদত করল।
7ইউসা, বানি, শেরেবিয়, যামীন, অক্কুব, শব্বথয়, হোদিয়, মাসেয়, কলীট, অসরীয়, যোষাবদ, হানন ও পলায়- এই সব লেবীয়রা সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা লোকদের কাছে তৌরাতের বিষয় বুঝিয়ে দিলেন। 8যা তেলাওয়াত করা হচ্ছে তা যাতে লোকেরা বুঝতে পারে সেইজন্য তাঁরা আল্লাহ্র তৌরাত কিতাব থেকে পড়ে অনুবাদ করে মানে বুঝিয়ে দিলেন।
9তারপর শাসনকর্তা নহিমিয়া, ইমাম ও আলেম উযায়ের এবং যে লেবীয়রা লোকদের শিক্ষা দিচ্ছিলেন তাঁরা সমস্ত লোকদের বললেন, “আজকের এই দিনটা আপনাদের মাবুদ আল্লাহ্র উদ্দেশে পবিত্র। আপনারা শোক বা কান্নাকাটি করবেন না।” তিনি এই কথা বললেন, কারণ লোকেরা সবাই তৌরাতের কথা শুনে কাঁদছিল।
10নহিমিয়া বললেন, “আপনারা গিয়ে ভাল ভাল খাবার ও মিষ্টি রস খান আর যাদের কোন খাবার নেই তাদের কিছু কিছু পাঠিয়ে দিন। আজকের দিনটা হল আমাদের মাবুদের উদ্দেশে পবিত্র। আপনারা দুঃখ করবেন না, কারণ মাবুদের দেওয়া আনন্দই হল আপনাদের শক্তি।”
11লেবীয়রা সমস্ত লোকদের শান্ত করে বললেন, “আপনারা নীরব হন, কারণ আজকের দিনটা পবিত্র। আপনারা দুঃখ করবেন না।”
12তখন সমস্ত লোক খুব আনন্দের সংগে খাওয়া-দাওয়া করবার জন্য ও খাবারের অংশ পাঠাবার জন্য চলে গেল, কারণ যে সব কথা তাদের জানানো হয়েছিল তা তারা বুঝতে পেরেছিল।
13সেই মাসের দ্বিতীয় দিনে সমস্ত বংশের প্রধান লোকেরা, ইমামেরা ও লেবীয়রা তৌরাত কিতাব ভাল করে বুঝবার জন্য আলেম উযায়েরের কাছে একত্র হলেন। 14তাঁরা তৌরাতের মধ্যে দেখতে পেলেন মূসার মধ্য দিয়ে মাবুদ এই হুকুম দিয়েছেন যে, সপ্তম মাসের ঈদের সময় বনি-ইসরাইলরা কুঁড়ে-ঘরে বাস করবে, 15আর তাদের গ্রামগুলোতে ও জেরুজালেমে তারা এই কথা ঘোষণা ও প্রচার করবে, “যেমন লেখা আছে সেইমত তোমরা পাহাড়ী এলাকায় গিয়ে কুঁড়ে-ঘর বানাবার জন্য জলপাই ও বুনো জলপাই গাছের ডাল আর গুলমেঁদি, খেজুর ও পাতা-ভরা গাছের ডাল নিয়ে আসবে।”
16সেইজন্য লোকেরা গিয়ে ডাল নিয়ে এসে কেউ কেউ তাদের ঘরের ছাদের উপরে কিংবা উঠানে কিংবা আল্লাহ্র ঘরের উঠানে কিংবা পানি-দরজার কাছের চকে কিংবা আফরাহীম-দরজার কাছের চকে নিজেদের জন্য কুঁড়ে-ঘর তৈরী করল। 17বন্দীদশা থেকে ফিরে আসা গোটা দলটাই কুঁড়ে-ঘর তৈরী করে সেগুলোর মধ্যে বাস করল। নূনের ছেলে ইউসার সময় থেকে সেই দিন পর্যন্ত বনি-ইসরাইলরা এই রকম আর করে নি। তারা খুব বেশী আনন্দ করল।
18প্রথম দিন থেকে শুরু করে শেষ দিন পর্যন্ত উযায়ের প্রতিদিনই আল্লাহ্র তৌরাত কিতাব থেকে তেলাওয়াত করতে থাকলেন। লোকেরা সাত দিন ধরে ঈদ পালন করল আর অষ্টম দিনে নিয়ম অনুসারে শেষ দিনের বিশেষ মাহ্ফিল হল।