মাতম 4

বনি-ইসরাইলদের দুঃখ

1হায়! সোনা কেমন করে তার উজ্জ্বলতা হারিয়েছে,

খাঁটি সোনা ্নান হয়ে গেছে।
প্রত্যেকটি রাস্তার মোড়ে মোড়ে
ছড়িয়ে রয়েছে দামী দামী পাথরগুলো।
2সিয়োনের ছেলেরা একদিন সোনার মত মূল্যবান ছিল;
তাদের এখন মনে করা হয় কুমারের তৈরী মাটির পাত্রের মত।
3শিয়ালেরা পর্যন্ত নিজের বাচ্চাদের বুকের দুধ খাওয়ায়,
কিন্তু আমার লোকেরা মরুভূমির উট পাখীদের মত
নিষ্ঠুর হয়ে গেছে।
4পিপাসায় শিশুদের জিভ্‌তালুতে লেগে যাচ্ছে;
ছেলেমেয়েরা রুটি চাইছে, কিন্তু কেউ তা দিচ্ছে না।
5যারা একদিন ভাল ভাল খাবার খেত
তারা এখন অভাবের মধ্যে পথে পথে রয়েছে।
যারা দামী বেগুনে কাপড় পরে মানুষ হয়েছে
তারা এখন ছাইয়ের গাদায় শুয়ে আছে।
6যে সাদুমকে মুহূর্তের মধ্যে উল্টে ফেলা হয়েছিল,
যার বিরুদ্ধে কোন মানুষের হাত ওঠে নি,
সেই সাদুমের গুনাহের চেয়েও আমার লোকদের অন্যায় বেশী।
7তাদের বাছাই করা নেতারা ছিল তুষারের চেয়েও উজ্জ্বল,
ছিল দুধের চেয়েও সাদা;
তাদের শরীর প্রবাল পাথরের চেয়ে লাল ছিল
আর চেহারা ছিল নীলকান্তমণির মত।
8কিন্তু তারা এখন কালির চেয়েও কালো হয়েছে;
রাস্তায় তাদের চেনা যায় না।
তাদের চামড়া হাড়ের উপর কুঁচকে গেছে;
তা কাঠের মত শুকিয়ে গেছে।
9দুর্ভিক্ষে মরার চেয়ে বরং যুদ্ধে মরা ভাল;
আমার লোকেরা ক্ষেতের শস্যের অভাবে
খিদের যন্ত্রণায় ক্ষয় হয়ে যাচ্ছে।
10স্নেহময়ী স্ত্রীলোকেরা নিজের হাতে তাদের সন্তানদের রান্না করেছে।
আমার লোকদের ধ্বংসের সময়
তাদের সন্তানেরাই তাদের খাবার হয়েছিল।
11মাবুদ তাঁর রাগকে পুরোপুরিই বের করেছেন;
তাঁর জ্বলন্ত গজব তিনি ঢেলে দিয়েছেন।
তিনি সিয়োনে আগুন জ্বেলেছেন;
তা তার ভিত্তিগুলো পর্যন্ত জ্বালিয়ে দিয়েছে।
12বাদশাহ্‌রা কিংবা দুনিয়ার কোন লোকই বিশ্বাস করত না যে,
জেরুজালেমের দরজা দিয়ে কোন শত্রু বা বিপক্ষ ঢুকতে পারে।
13এই ঘটনা ঘটেছিল তার নবীদের গুনাহের জন্য,
তার ইমামদের অন্যায়ের জন্য,
কারণ সেখানেই তারা সৎ লোকদের রক্তপাত করত।
14তাই তারা অন্ধদের মত রাস্তায় রাস্তায় হাঁত্‌ড়ে বেড়িয়েছে;
তারা এমনভাবে রক্তে নাপাক হয়েছে যে,
কেউ তাদের কাপড় ছুঁতে চাইত না।
15লোকে চিৎকার করে তাদের বলেছে,
“সরে যাও, তোমরা নাপাক।
সরে যাও, সরে যাও, আমাদের ছুঁয়ো না।”
তারা পালিয়ে গিয়ে ঘুরে বেড়িয়েছে;
অন্যান্য জাতির লোকেরা বলেছে,
“তারা এখানে আর থাকতে পারবে না।”
16মাবুদ নিজেই তাদের ছড়িয়ে দিয়েছেন;
তিনি তাদের প্রতি আর মনোযোগ দেন না।
লোকে ইমামদের সম্মান দেখায় না,
দয়া করে না বৃদ্ধ নেতাদের।
17তবুও সাহায্যের জন্য মিথ্যাই তাকিয়ে থেকে থেকে
আমাদের চোখ দুর্বল হয়ে পড়েছে;
আমরা অনবরত এমন এক জাতির দিকে তাকিয়ে ছিলাম
যে জাতি আমাদের রক্ষা করতে পারত না।
18লোকে আমাদের জন্য ওৎ পেতে থাকত,
তাই আমরা আমাদের খোলা জায়গাগুলোতে হাঁটতে পারতাম না।
আমাদের শেষ কাল কাছে এসেছিল, আমাদের দিনগুলো ফুরিয়ে গিয়েছিল,
কারণ আমাদের শেষ সময় উপস্থিত হয়েছিল।
19আমাদের যারা তাড়া করত
তারা আকাশের ঈগল পাখীর চেয়েও বেগে যেত;
তারা পাহাড়ে পাহাড়ে আমাদের তাড়া করত
আর মরুভূমিতে ওৎ পেতে থাকত আমাদের জন্য।
20যিনি মাবুদের অভিষিক্ত, যিনি আমাদের জীবন্তবায়ু,
তিনি তাদের ফাঁদে ধরা পড়েছিলেন;
কিন্তু আমরা ভেবেছিলাম তাঁর ছায়াতে
জাতিদের মধ্যে আমরা বাস করব।
21আওস দেশে বাসকারিণী হে ইদোম-কন্যা,
তুমি আনন্দ কর, খুশী হও;
কিন্তু তোমাকেও সেই পেয়ালা দেওয়া হবে;
তুমি মাতাল ও উলংগ হবে।
22হে সিয়োন্তকন্যা, তোমার শাস্তি শেষ হবে;
তিনি তোমাকে আর বন্দীদশায় ফেলে রাখবেন না;
কিন্তু হে ইদোম-কন্যা, তিনি তোমার অন্যায়ের শাস্তি দেবেন
এবং তোমার গুনাহ্‌প্রকাশ করবেন।