আইয়ুব 2

হযরত আইয়ুব (আঃ)-এর দ্বিতীয় পরীক্ষা

1আর একদিন ফেরেশতারা মাবুদের সামনে গিয়ে উপস্থিত হলেন, আর শয়তানও তাঁর সামনে উপস্থিত হবার জন্য ফেরেশতাদের সংগে আসল। 2মাবুদ শয়তানকে বললেন, “তুমি কোথা থেকে আসলে?”

জবাবে শয়তান মাবুদকে বলল, “দুনিয়ার মধ্যে এদিক ওদিক ঘোরাফেরা করে আসলাম।”

3তখন মাবুদ শয়তানকে বললেন, “আমার গোলাম আইয়ুবের দিকে কি তুমি লক্ষ্য করেছ? দুনিয়াতে তাঁর মত আর কেউ নেই। সে নির্দোষ ও সৎ। সে আমাকে ভয় করে ও খারাপী থেকে দূরে থাকে। যদিও তুমি বিনা কারণে তার সর্বনাশ করবার জন্য আমাকে খুঁচিয়ে তুলেছ তবুও সে এখনও কোন দোষ করে নি।”

4শয়তান বলল, তার জীবনই তার কাছে প্রাণের প্রাণ; মানুষ নিজের প্রাণ বাঁচাবার জন্য তার যা কিছু আছে সবই দেবে। 5আপনি হাত বাড়িয়ে তার শরীরে আঘাত করুন, সে নিশ্চয়ই আপনার সামনেই আপনার কুফরী করবে।”

6তখন মাবুদ শয়তানকে বললেন, “খুব ভাল; তাকে তোমার হাতে দিলাম, কিন্তু তুমি তাকে প্রাণে মারবে না।”

7এর পর শয়তান মাবুদের সামনে থেকে বের হয়ে গেল এবং আইয়ুবের মাথার তালু থেকে পায়ের তলা পর্যন্ত যন্ত্রণাপূর্ণ ঘা দিয়ে তাঁকে কষ্ট দিতে লাগল। 8তখন আইয়ুব ছাইয়ের মধ্যে বসে মাটির পাত্রের একটা টুকরা দিয়ে নিজের শরীর ঘষতে লাগলেন।

9তখন তাঁর স্ত্রী তাঁকে বললেন, “তুমি এখনও দাবি করছ যে, তুমি নির্দোষ? আল্লাহ্‌কে দোষ দিয়ে মরে যাও।”

10কিন্তু আইয়ুব তাঁকে বললেন, “তুমি একজন বোকা স্ত্রীলোকের মত কথা বলছ। আমরা আল্লাহ্‌র কাছ থেকে কি কেবল উপকারই গ্রহণ করব, অপকার গ্রহণ করব না?”

এই সব হলেও আইয়ুব তাঁর কথার মধ্য দিয়ে গুনাহ্‌করলেন না।

হযরত আইয়ুব (আঃ)-এর তিন বন্ধু

11তৈমনীয় ইলীফস, শূহীয় বিল্‌দদ ও নামাথীয় সোফর নামে আইয়ুবের তিনজন বন্ধু যখন আইয়ুবের সব বিপদের কথা শুনলেন তখন তাঁরা তাঁদের বাড়ী থেকে রওনা হলেন। তাঁরা একত্র হয়ে পরামর্শ করলেন যে, তাঁরা গিয়ে তাঁর সংগে শোক করবেন ও তাঁকে সান্ত্বনা দেবেন। 12তাঁরা দূর থেকে তাঁকে দেখে চিনতেই পারলেন না। তাঁরা জোরে জোরে কাঁদতে লাগলেন এবং নিজেদের কাপড় ছিঁড়ে মাথার উপরে আসমানের দিকে ধুলা ছড়ালেন। 13তারপর তাঁরা সাত দিন ও সাত রাত তাঁর সংগে মাটিতে বসে রইলেন। তাঁদের মধ্যে কেউ তাঁকে কিছুই বললেন না, কারণ তাঁর কষ্ট যে কি ভীষণ তা তাঁরা দেখতেই পাচ্ছিলেন।