ইয়ারমিয়া 49

অম্মোনের বিষয়ে

1অম্মোনীয়দের বিষয়ে মাবুদ এই কথা বলছেন, “ইসরাইলের কি কোন ছেলে নেই? তার মৃত্যুর পর তার সম্পত্তির অধিকারী কি কেউ নেই? তাহলে মিল্‌কম কেন গাদ-গোষ্ঠীর জায়গা অধিকার করেছে? কেন মিল্‌কমের পূজাকারীরা সেখানকার শহরগুলোতে বাস করছে? 2দেখ, সময় আসছে যখন আমি অম্মোনীয়দের রব্বা শহরের বিরুদ্ধে যুদ্ধের হাঁক দেব; তখন সেটা ধ্বংসের ঢিবি হবে, আর তার চারপাশের গ্রামগুলোতে আগুন লাগানো হবে। তখন যারা ইসরাইলকে তাড়িয়ে বের করে দিয়েছে ইসরাইল তাদেরই তাড়িয়ে বের করে দেবে। আমি মাবুদ এই কথা বলছি।

3“হে হিশ্‌বোন, বিলাপ কর, কারণ অয় শহর ধ্বংস হয়ে গেছে। হে রব্বা শহরের বাসিন্দারা, কাঁদ; ছালার চট পরে শোক প্রকাশ কর। দেয়ালগুলোর মধ্যে দৌড়াদৌড়ি কর, কারণ তোমার দেবতা মিল্‌কম বন্দী হয়ে দূর দেশে যাবে, আর তার সংগে যাবে তার ইমাম ও উঁচু পদের কর্মচারীরা। 4কেন তুমি তোমার উর্বর উপত্যকাগুলো নিয়ে গর্ব করছ? হে অবিশ্বস্ত কন্যা, তোমার ধন-সম্পদের উপর ভরসা করে তুমি বলছ, ‘কে আমাকে আক্রমণ করবে?’ 5আমি দীন-দুনিয়ার মালিক আল্লাহ্‌রাব্বুল আলামীন বলছি যে, তোমার চারদিকের সকলের কাছ থেকে আমি তোমার উপর ভীষণ ভয় নিয়ে আসব। তোমাদের প্রত্যেককে তাড়িয়ে দেওয়া হবে; পালিয়ে যাওয়া লোকদের একত্র করবার জন্য কেউ থাকবে না। 6কিন্তু পরে আমি অম্মোনীয়দের অবস্থা ফিরাব।”

ইদোমের বিষয়ে

7ইদোমের বিষয়ে আল্লাহ্‌রাব্বুল আলামীন বলছেন, “তৈমনে কি জ্ঞান নেই? বুদ্ধিমানদের কাছ থেকে কি উপদেশ শেষ হয়ে গেছে? তাদের জ্ঞান কি ক্ষয় হয়ে গেছে? 8হে দদানের বাসিন্দারা, তোমরা পিছন ফিরে পালিয়ে যাও, গোপন জায়গায় গিয়ে লুকাও, কারণ ইস্‌কে শাস্তি দেবার সময় আমি তার উপর বিপদ আনব। 9যারা আংগুর তোলে তারা যদি তোমার কাছে আসে তবে কি তারা কিছু আংগুর বাকী রাখবে না? চোরেরা যদি রাতে আসে তবে তাদের যতটা দরকার ততটাই কেবল চুরি করবে। 10কিন্তু আমি ইসের জায়গাটা জনশূন্য করে ফেলব। সে যাতে লুকাতে না পারে সেইজন্য আমি তার লুকাবার জায়গাগুলো প্রকাশ করে দেব। তার বংশের লোকেরা, আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীরা ধ্বংস হয়ে যাবে আর সে-ও থাকবে না। 11তোমার এতিম ছেলেমেয়েদের রেখে যাও; আমি তাদের জীবন রক্ষা করব। তোমার বিধবারাও আমার উপর ভরসা করুক।”

12মাবুদ বলছেন, “যারা শাস্তি পাবার উপযুক্ত নয়, তাদের যদি শাস্তির পেয়ালায় খেতেই হয় তবে তুমি কেন শাস্তি না পেয়ে থাকবে? তোমাকে সেই পেয়ালায় খেয়ে শাস্তি পেতেই হবে। 13আমি আমার নিজের নামেই কসম খাচ্ছি যে, বস্রা ধ্বংস হয়ে ঘৃণার পাত্র হবে। লোকেরা তার অবস্থা দেখে হতভম্ব হবে এবং তার নাম নিয়ে বদদোয়া দেবে। তার সব গ্রাম ও শহরগুলো চিরকালের জন্য ধ্বংস হয়ে থাকবে।”

14আমি মাবুদের কাছ থেকে এই খবর শুনেছি যে, একজন দূতকে জাতিদের কাছে পাঠানো হয়েছে। সে বলছে, “তোমরা ইদোমকে আক্রমণ করবার জন্য একত্র হও। যুদ্ধ করবার জন্য ওঠো।”

15মাবুদ বলছেন, “এখন আমি জাতিদের মধ্যে তোমাকে সবচেয়ে ছোট করব এবং লোকদের মধ্যে ঘৃণার পাত্র করব। 16হে পাথরের ফাটলে বাসকারী পাহাড়ের উঁচু উঁচু জায়গার অধিকারী, তুমি ভয়ংকর বলে তোমার দিলের যে গর্ব তা তোমাকে ছলনা করেছে। যদিও তুমি ঈগলের মত উঁচু জায়গায় তোমার বাসা তৈরী কর তবুও সেখান থেকে আমি তোমাকে নীচে নামিয়ে আনব।

17“ইদোমের অবস্থা দেখে লোকেরা হতভম্ব হবে; যারা তার পাশ দিয়ে যাবে তারা সবাই ভীষণ ভয় পাবে এবং তার সব আঘাতের জন্য তাকে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করবে। 18আমি মাবুদ বলছি, আশেপাশের গ্রাম সুদ্ধ যেমন সাদুম ও আমুরাকে ধ্বংস করা হয়েছিল তেমনি ইদোমে কেউ বাস করবে না; তার মধ্যে কোন মানুষ থাকবে না।

19“জর্ডানের জংগল থেকে সিংহ যেমন উঠে এসে ভাল চারণ ভূমিতে শিকার করতে যায় তেমনি করে আমি মুহূর্তের মধ্যে ইদোমকে তার দেশ থেকে তাড়া করব। আমি তার উপর আমার বাছাই করা বান্দাকে নিযুক্ত করব। কে আমার সমান? কে আমার বিরুদ্ধে দাঁড়াতে পারে? কোন্‌পালক আমার বিরুদ্ধে টিকে থাকতে পারে?”

20কাজেই ইদোমের বিরুদ্ধে মাবুদ কি পরিকল্পনা করেছেন, তৈমনের বাসিন্দাদের বিরুদ্ধে তিনি কি ঠিক করেছেন তা শোন্তপালের বাচ্চাদের টেনে নিয়ে যাওয়া হবে; তাদের কাজের দরুনই তাদের চারণ ভূমি তিনি একেবারে ধ্বংস করে দেবেন। 21তাদের পতনের শব্দে দুনিয়া কাঁপবে; তাদের কান্না লোহিত সাগর পর্যন্ত শোনা যাবে। 22দেখ, তাদের শত্রু ঈগলের মত করে উঁচুতে উড়বে আর বস্রার উপরে ডানা মেলে দিয়ে শোঁ করে নীচে নেমে আসবে। সেই দিন ইদোমের যোদ্ধাদের অন্তর প্রসব-যন্ত্রণা ভোগকারিণী স্ত্রীলোকের অন্তরের মত হবে।

দামেস্কের বিষয়ে

23দামেস্কের বিষয়ে মাবুদ বলছেন, “হামা আর অর্পদ ভয়ে ব্যাকুল হয়েছে, কারণ তারা খারাপ খবর শুনেছে। তারা হতাশ হয়েছে, অস্থির সাগরের মত অশান্ত হয়েছে। 24দামেস্ক দুর্বল হয়েছে, সে পালাবার জন্য ফিরেছে এবং ভয় তাকে আঁকড়ে ধরেছে; প্রসব-যন্ত্রণা ভোগকারিণী স্ত্রীলোকের মত যন্ত্রণা ও ব্যথা তাকে ধরেছে। 25সেই বিখ্যাত শহর, যে শহরকে নিয়ে আমি খুশী হতাম, কেন লোকেরা তা ত্যাগ করে চলে যায় নি? 26আমি আল্লাহ্‌রাব্বুল আলামীন বলছি যে, তার যুবকেরা নিশ্চয়ই শহরের খোলা জায়গায় মরে পড়ে থাকবে; সেই দিন তার সব সৈন্যদের শেষ করে দেওয়া হবে। 27দামেস্কের দেয়ালগুলোতে আমি আগুন লাগিয়ে দেব; তা বিন্‌হদদের কেল্লাগুলো পুড়িয়ে ফেলবে।”

কায়দার ও হাৎসোরের বিষয়ে

28ব্যাবিলনের বাদশাহ্‌বখতে-নাসার কায়দার ও হাৎসোরের যে রাজ্যগুলোকে হারিয়ে দিয়েছিলেন সেগুলোর বিষয়ে মাবুদ বলছেন, “ওঠো, কায়দার আক্রমণ কর এবং পূর্বদেশের লোকদের ধ্বংস কর। 29লোকে তাদের সব তাম্বু ও পশুপাল নিয়ে যাবে আর তাদের সমস্ত জিনিস, তাম্বুর পর্দা ও উট নিয়ে যাবে। তারা চিৎকার করে তাদের বলবে, ‘চারদিকেই ভীষণ ভয়!’ ”

30মাবুদ বলছেন, “হে হাৎসোরের বাসিন্দারা, তোমরা তাড়াতাড়ি পালিয়ে যাও। তোমরা গোপন স্থানে গিয়ে থাক। ব্যাবিলনের বাদশাহ্‌বখতে-নাসার তোমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছে, তোমাদের বিরুদ্ধে একটা পরিকল্পনা করেছে। 31হে ব্যাবিলনীয়রা, তোমরা ওঠো, সেই আরামে থাকা জাতি যে নিরাপদে বাস করে তাকে আক্রমণ কর। সেই জাতির দরজাও নেই, আগলও নেই; তারা একা বাস করে। 32তাদের উটগুলো লুটের মাল হবে এবং তাদের মস্ত বড় পশুপাল লুটের জিনিস হবে। যারা মাথার দু’পাশের চুল কাটে তাদের আমি চারদিকে ছড়িয়ে দেব এবং সব দিক থেকেই তাদের উপর বিপদ আনব। 33হাৎসোর হবে শিয়ালদের বাসস্থান ও চিরস্থায়ী জনশূন্য জায়গা। কেউ সেখানে বাস করবে না, তার মধ্যে কোন মানুষ থাকবে না।”

ইলামের বিষয়ে

34এহুদার বাদশাহ্‌সিদিকিয়ের রাজত্বের প্রথম দিকে ইলাম সম্বন্ধে মাবুদের এই কালাম নবী ইয়ারমিয়ার উপর নাজেল হল, 35“আমি আল্লাহ্‌রাব্বুল আলামীন বলছি যে, আমি ইলামের ধনুক, তাদের শক্তির প্রধান খুঁটি ভেংগে ফেলব। 36আমি আসমানের চারদিক থেকে চারটা বাতাস ইলামের বিরুদ্ধে আনব। সেই বাতাসে আমি তাদের চারদিকে ছড়িয়ে দেব; ইলামের দূর করে দেওয়া বন্দীরা সমস্ত জাতির কাছে যাবে। 37যারা তাদের হত্যা করতে চায় সেই শত্রুদের সামনেই আমি ইলামীয়দের চুরমার করে দেব; আমার জ্বলন্ত রাগে আমি তাদের উপর বিপদ নিয়ে আসব। তাদের শেষ করে না ফেলা পর্যন্ত আমি তাদের বিরুদ্ধে তলোয়ার পাঠাব। 38আমি ইলামে আমার সিংহাসন স্থাপন করব এবং তার বাদশাহ্‌ও রাজকর্মচারীদের ধ্বংস করব, 39কিন্তু ভবিষ্যতে আমি ইলামের অবস্থা ফিরাব। আমি মাবুদ এই কথা বলছি।”