ইয়ারমিয়া 20

হযরত ইয়ারমিয়া (আঃ) ও ইমাম পশ্‌হূর

1ইয়ারমিয়া যখন নবী হিসাবে এই সব কথা বলছিলেন তখন মাবুদের ঘরের প্রধান কর্মচারী ইম্মেরের ছেলে ইমাম পশ্‌হূর সেই কথা শুনলেন। 2তিনি নবী ইয়ারমিয়াকে মারধর করে মাবুদের ঘরের কাছে উঁচু জায়গায় বিন্‌ইয়ামীন্তদরজার ধারে হাড়িকাঠে বন্ধ করে রাখলেন। 3তার পরের দিন পশ্‌হূর সেই হাড়িকাঠ থেকে ইয়ারমিয়াকে খুলে আনলেন। তখন ইয়ারমিয়া তাঁকে বললেন, “মাবুদের দেওয়া আপনার নাম পশ্‌হূর নয় বরং মাগোর-মিষাবীব (যার মানে ‘চারদিকে ভীষণ ভয়’), 4কারণ মাবুদ বলছেন, ‘আমি তোমাকে তোমার নিজের ও তোমার বন্ধুবান্ধবদের কাছে ভীষণ ভয়ের পাত্র করব। তুমি নিজের চোখে যুদ্ধে শত্রুদের হাতে তাদের মরে যেতে দেখবে। সমস্ত এহুদাকে আমি ব্যাবিলনের বাদশাহ্‌র হাতে তুলে দেব। সে তাদের অনেককে ব্যাবিলনে নিয়ে যাবে আর বাকী লোকদের হত্যা করবে। 5আমি এই শহরের সমস্ত ধন-সম্পদ, অর্থাৎ তাদের ক্ষেতের শস্য ও সব দামী জিনিস এবং এহুদার বাদশাহ্‌দের সমস্ত ধনভাণ্ডার তাদের শত্রুদের হাতে তুলে দেব। তারা সেগুলো লুট করে ব্যাবিলনে নিয়ে যাবে। 6আর হে পশ্‌হূর, তোমাকে ও তোমার বাড়ীর সকলকে বন্দী করে ব্যাবিলনে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে তুমি মরবে ও তোমাকে দাফন করা হবে; তোমার যে সব বন্ধুদের কাছে তুমি নবী হিসাবে কথা বলবার সময় মিথ্যা কথা বলেছ তাদের সকলেরই একই দশা হবে।’ ”

হযরত ইয়ারমিয়া (আঃ)-এর নালিশ

7হে মাবুদ, তুমি আমাকে ভুলিয়েছ বলে আমার এই অবস্থা হয়েছে; তুমি আমার চেয়ে শক্তিশালী বলে তুমি জয়ী হয়েছ। আমি সারা দিন ঠাট্টার পাত্র হয়েছি; প্রত্যেকে আমাকে ঠাট্টা করে। 8যতবার আমি কথা বলি ততবারই ভীষণ অনিষ্ট ও ধ্বংসের কথা চিৎকার করে তবলিগ করি। কাজেই মাবুদের কালামের জন্য সারা দিন আমাকে অপমান ও ভীষণ নিন্দা করা হয়। 9কিন্তু যদি আমি বলি, “আমি তাঁর কথা উল্লেখ করব না কিংবা তাঁর নাম করে আর কিছু বলব না,” তবে তাঁর কথা আমার দিলে যেন জ্বলন্ত আগুন হয়ে হাড়ের মধ্যে বন্ধ হয়ে থাকে। আমি তা ভিতরে রাখতে রাখতে ক্লান্ত হয়ে পড়ি; সত্যিই আমি আর তা ভিতরে রাখতে পারি না। 10আমার চারদিকে ভীষণ ভয়, কারণ আমি এই সব কথা অনেক লোকদের ফিস্‌ফিস্‌করে বলতে শুনি, “তার নামে নালিশ কর; চল, আমরা তার নামে নালিশ করি।” আমার সমস্ত বন্ধুরা এই বলে আমার পিছ্‌লে পড়বার অপেক্ষায় আছে, “হয়তো আমরা তাকে ঠকাতে পারব, আর তখন আমরা তার উপর জয়ী হব আর প্রতিশোধ নেব।” 11কিন্তু মাবুদ শক্তিশালী যোদ্ধার মত আমার সংগে সংগে আছেন, তাই আমার অত্যাচারীরা উচোট খাবে এবং জয়ী হবে না। তারা বিফল হবে এবং খুব লজ্জিত হবে; তাদের অসম্মান কেউ কখনও ভুলে যাবে না।

12হে আল্লাহ্‌রাব্বুল আলামীন, তুমি তো সৎ লোকদের পরীক্ষা করে থাক এবং প্রত্যেকের দিল ও মনের কথা জান। আমার শত্রুদের উপর তোমার প্রতিশোধ নেওয়া আমাকে দেখতে দাও, কারণ আমি আমার নালিশ তোমাকেই জানিয়েছি।

13তোমরা মাবুদের উদ্দেশে কাওয়ালী গাও। মাবুদের প্রশংসা কর। তিনি দুষ্টদের হাত থেকে অভাবীদের প্রাণ উদ্ধার করেন।

14আমি যেদিন জন্মেছিলাম সেই দিনটা বদদোয়াপ্রাপ্ত হোক। যেদিন আমার মা আমাকে জন্ম দিয়েছিলেন সেই দিনটা দোয়া বিহীন হোক। 15“আপনার একটি ছেলে হয়েছে,” এই সংবাদ দিয়ে যে আমার বাবাকে আনন্দিত করেছিল সে বদদোয়াপ্রাপ্ত হোক। 16মাবুদ মমতা না করে যে সব শহরের সর্বনাশ করেছিলেন ঐ লোকটি সেগুলোর মত হোক। সে সকালে শুনুক কান্নাকাটির শব্দ আর দুপুরে শুনুক বিপদের চিৎকার; 17কারণ মায়ের গর্ভে থাকতে সে আমাকে হত্যা করে নি। তাতে আমার মা-ই আমার কবর হতেন, আর তাঁর পেট চিরকাল বড় হয়েই থাকত। 18কষ্ট আর দুঃখ দেখবার জন্য এবং লজ্জায় আমার জীবন কাটাবার জন্য কেন আমি গর্ভ থেকে বের হয়ে আসলাম