ইয়ারমিয়া 11

অবাধ্যতার শাস্তি

1-3 মাবুদ আমাকে বললেন যেন আমি এই ব্যবস্থার কথাগুলো শুনি এবং তা এহুদার ও জেরুজালেমের লোকদের বলি যে, ইসরাইলের মাবুদ আল্লাহ্‌বলছেন, “যে কেউ এই ব্যবস্থার কথাগুলো পালন না করে সে বদদোয়াপ্রাপ্ত। 4যখন আমি তোমাদের পূর্বপুরুষদের মিসর থেকে, লোহা গলানো চুলা থেকে বের করে এনেছিলাম তখন আমি এই বলে তাদের হুকুম দিয়েছিলাম, ‘তোমরা আমার কথা শোন এবং আমি যা করতে হুকুম দিয়েছি তা কর, তাহলে তোমরা আমার বান্দা হবে ও আমি তোমাদের আল্লাহ্‌হব। 5আমি তোমাদের পূর্বপুরুষদের কাছে এমন দেশ দেবার কসম খেয়েছিলাম যেখানে দুধ, মধু ও কোন কিছুর অভাব নেই, আর সেই কসম আমি পূরণ করব।’ সেই দেশই আজ তোমরা অধিকার করে আছ।”

জবাবে আমি বললাম, “আমিন, মাবুদ।”

6মাবুদ আমাকে এহুদার শহরগুলোতে ও জেরুজালেমের রাস্তায় রাস্তায় এই কথা ঘোষণা করতে বললেন, “এই ব্যবস্থার কথাগুলো শুনে তা পালন কর। 7তোমাদের পূর্বপুরুষদের যখন আমি মিসর দেশ থেকে বের করে এনেছিলাম তখন থেকে আজ পর্যন্ত বার বার তাদের সাবধান করে দিয়ে বলেছিলাম, ‘তোমরা আমার কথামত চল।’ 8কিন্তু তারা তা শোনে নি বা তাতে মনোযোগও দেয় নি; তার বদলে তারা তাদের একগুঁয়ে খারাপ দিলের ইচ্ছামত চলেছে। কাজেই যে ব্যবস্থা আমি তাদের পালন করতে বলেছিলাম তারা তা পালন করে নি বলে সেই ব্যবস্থার কথা অনুসারে আমি তাদের শাস্তি দিয়েছি।”

9তারপর মাবুদ আমাকে বললেন, “এহুদার ও জেরুজালেমের লোকদের মধ্যে একটা ষড়যন্ত্র চলছে। 10তারা তাদের সেই পূর্বপুরুষদের গুনাহের দিকে ফিরে গেছে যারা আমার কথা শুনতে অস্বীকার করেছিল। তারা দেব-দেবীদের এবাদত করবার জন্য তাদের পিছনে গেছে। তাদের পূর্বপুরুষদের জন্য আমি যে ব্যবস্থা স্থাপন করেছিলাম তা ইসরাইল ও এহুদার লোকেরা পালন করে নি। 11কাজেই আমি মাবুদ বলছি যে, আমি তাদের উপর এমন বিপদ আনব যা থেকে তারা পালাতে পারবে না। যদিও তারা আমার কাছে কাঁদবে তবুও আমি তাদের কথা শুনব না। 12যখন বিপদ আসবে তখন এহুদার শহরগুলোর ও জেরুজালেমের লোকেরা গিয়ে সেই দেব-দেবীর কাছে কান্নাকাটি করবে যাদের সামনে তারা ধূপ জ্বালিয়েছিল, কিন্তু তারা তাদের রক্ষা করবে না। 13এহুদার যতগুলো শহর ও গ্রাম আছে ততগুলো দেব-দেবীও আছে, আর জেরুজালেমের যতগুলো রাস্তা আছে সেই লজ্জাজনক বাল দেবতার উদ্দেশে ধূপ জ্বালাবার জন্য ততগুলো বেদীও তৈরী করা হয়েছে।

14“এই লোকদের জন্য তুমি কোন মুনাজাত কোরো না কিংবা তাদের জন্য কোন মিনতি বা অনুরোধ কোরো না, কারণ তাদের কষ্টের সময় তারা আমাকে ডাকলে আমি শুনব না।

15“আমার ঘরে আমার প্রিয় বান্দাদের কি অধিকার আছে? তারা তো অনেক খারাপ কাজ করেছে, এমন কি, তারা আমার উদ্দেশে কোরবানী দেওয়া গোশ্‌ত তাদের কাছ থেকে সরিয়ে ফেলে। হে অন্যায়কারীরা, যখন বিপদ তোমাদের উপর আসবে তখনও কি তোমরা আনন্দ করতে থাকবে?”

16মাবুদ এই জাতিকে ফলে ভরা সুন্দর একটা জলপাই গাছ বলে ডেকেছিলেন। কিন্তু ভীষণ ঝড়ের গর্জনে তিনি তাতে আগুন ধরিয়ে দেবেন আর তাতে তার ডালগুলো ভেংগে পড়বে। 17আল্লাহ্‌রাব্বুল আলামীন, যিনি তাকে লাগিয়েছিলেন তিনিই তার সর্বনাশের রায় দিয়েছেন, কারণ এহুদা ও ইসরাইলের লোকেরা খারাপ কাজ করেছে এবং বাল দেবতার উদ্দেশে ধূপ জ্বালিয়ে তাঁর রাগকে খুঁচিয়ে তুলেছে।

হযরত ইয়ারমিয়া (আঃ)-এর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র

18অনাথোতের লোকদের ষড়যন্ত্রের কথা মাবুদ আমার কাছে প্রকাশ করেছিলেন বলে আমি তা জানতে পেরেছিলাম। 19আমি ছিলাম জবাই করতে নিয়ে যাওয়া শান্ত ভেড়ার বাচ্চার মত; আমি বুঝতে পারি নি যে, তারা এই বলে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছে, “এস, আমরা গাছ ও তার ফল নষ্ট করে ফেলি; এস, আমরা তাকে জীবিতদের দেশ থেকে কেটে ফেলে দিই যাতে তার নাম আর মনে করা না হয়।”

20হে আল্লাহ্‌রাব্বুল আলামীন, তুমি ন্যায়ভাবে বিচার করে থাক আর দিল ও মনের পরীক্ষা করে থাক, তাই তাদের উপর তোমার প্রতিশোধ নেওয়া আমাকে দেখতে দাও, কারণ আমি আমার নালিশ তোমাকেই জানিয়েছি।

21সেইজন্য অনাথোতের লোকদের বিষয়ে মাবুদ বলছেন, “যারা তোমার প্রাণ নিতে চাইছে আর বলছে, ‘মাবুদের নামে নবী হিসাবে কথা বোলো না, বললে তুমি আমাদের হাতে মারা পড়বে,’ 22আমি আল্লাহ্‌রাব্বুল আলামীন বলছি যে, আমি তাদের শাস্তি দেব। তাদের যুবকেরা যুদ্ধে এবং তাদের ছেলেমেয়েরা দুর্ভিক্ষে মারা যাবে। 23তাদের বাকী বলতে কেউ থাকবে না, কারণ অনাথোতের লোকদের শাস্তি দেবার সময়ে আমি তাদের উপর সর্বনাশ নিয়ে আসব।”