ইশাইয়া 45

1মাবুদ তাঁর অভিষেক-করা বান্দা কাইরাসের সম্বন্ধে বলছেন, “তার সামনে জাতিদের দমন করবার জন্য আর বাদশাহ্‌দের শক্তিহীন করবার জন্য আমি তার ডান হাত ধরেছি। আমি তার সামনে দরজাগুলো খুলে দেব যাতে দরজাগুলো বন্ধ না থাকে।” 2তিনি কাইরাসকে বলছেন, “আমি তোমার আগে আগে গিয়ে উঁচু-নীচু জায়গাগুলো সমান করে দেব; আমি ব্রোঞ্জের সব দরজা ভেংগে দেব আর লোহার আগলগুলো কেটে ফেলব। 3আমি তোমাকে অন্ধকার জায়গায় রাখা ধন-সম্পদ আর লুকানো জায়গায় জমিয়ে রাখা ধন দেব, যাতে তুমি জানতে পার যে, আমিই আল্লাহ্‌, ইসরাইলের মাবুদ, যিনি তোমার নাম ধরে ডাকেন। 4আমার গোলাম ইয়াকুবের জন্য, আমার বেছে রাখা ইসরাইলের জন্য আমি তোমার নাম ধরে ডেকেছি। আমাকে তুমি না জানলেও আমি তোমাকে সম্মানের উপাধি দিয়েছি। 5আমিই আল্লাহ্‌, অন্য আর কেউ নেই; আমি ছাড়া অন্য মাবুদ নেই। তুমি আমাকে না জানলেও আমি তোমাকে শক্তি দিয়েছি, 6যেন পূর্ব দিক থেকে পশ্চিম দিক পর্যন্ত লোকে জানতে পারে যে, আমি ছাড়া আর কেউ নেই। আমিই মাবুদ, অন্য আর কেউ নেই। 7আমিই আলো এবং অন্ধকার সৃষ্টি করি; আমিই উন্নতি নিয়ে আসি ও সর্বনাশের সৃষ্টি করি। আমি মাবুদই এই সব করে থাকি।

8“হে আসমান, তুমি সততার বৃষ্টি ফেল; মেঘ সততা ঢেলে দিক। দুনিয়ার বুক খুলে গিয়ে উদ্ধার গজিয়ে উঠুক আর তার সংগে বেড়ে উঠুক সততা। আমি মাবুদই এর ব্যবস্থা করেছি।

9“ঘৃণ্য সেই লোক, যে তার সৃষ্টিকর্তার সংগে ঝগড়া করে। সে তো মাটির পাত্রগুলোর মধ্যে একটা পাত্র ছাড়া আর কিছু নয়। মাটি কি কুমারকে বলবে, ‘তুমি কি তৈরী করছ?’ তোমার তৈরী জিনিস কি বলবে, ‘তোমার হাত পাকা নয়’? 10ঘৃণ্য সেই লোক, যে তার বাবাকে বলে, ‘তুমি কি জন্ম দিয়েছ?’ কিংবা তার মাকে বলে ‘তুমি কি প্রসব করেছ?’

11“মাবুদ, যিনি ইসরাইলের আল্লাহ্‌পাক, যিনি তার সৃষ্টিকর্তা, তিনি এই কথা বলছেন, ‘তোমরা কি ভবিষ্যতের ঘটনা সম্বন্ধে আমাকে জিজ্ঞাসা করছ? আমার সন্তানদের সম্বন্ধে কিংবা আমার হাতের কাজের বিষয়ে কি আমাকে হুকুম দিচ্ছ? 12আমিই দুনিয়া তৈরী করে তার উপর মানুষকে সৃষ্টি করেছি; আমি নিজের হাতে আকাশকে বিছিয়ে দিয়েছি আর আসমানের সূর্য, চাঁদ ও তারাগুলোকে স্থাপন করেছি। 13আমার ন্যায্যতায় আমি কাইরাসকে উত্তেজিত করব; আমি তার সমস্ত পথ সোজা করব। সে আমার শহর আবার তৈরী করবে, আমার যে বান্দারা বন্দী ছিল সে তাদের ছেড়ে দেবে কিন্তু সে কোন দাম বা পুরস্কারের জন্য তা করবে না।’ আল্লাহ্‌রাব্বুল আলামীন এই কথা বলছেন।”

14মাবুদ ইসরাইল জাতিকে বলছেন, “মিসরের উপার্জন করা সম্পদ ও ইথিওপিয়ার ব্যবসার জিনিস তোমার কাছে আসবে। লম্বা লম্বা সবায়ীয়রা নিজেরাই তোমার কাছে আসবে; তারা তোমার হবে আর তোমার পিছনে পিছনে চলবে। তারা শিকলে বাঁধা অবস্থায় তোমার কাছে আসবে। তারা তোমার সামনে মাটিতে মাথা ঠেকিয়ে মিনতি জানাবে ও বলবে, ‘আল্লাহ্‌নিশ্চয়ই তোমার সংগে আছেন। একমাত্র তিনিই আল্লাহ্‌, আর কোন মাবুদ নেই।’ ”

15হে ইসরাইলের আল্লাহ্‌ও উদ্ধারকর্তা, সত্যিই তুমি এমন আল্লাহ্‌যিনি নিজেকে লুকিয়ে রাখেন। 16যারা মূর্তি তৈরী করে তারা সবাই লজ্জিত ও অসম্মানিত হবে; তারা একসংগে অপমানিত হয়ে চলে যাবে। 17কিন্তু আল্লাহ্‌ইসরাইলকে চিরকালের জন্য উদ্ধার করবেন; তোমরা কোন কালেই লজ্জিত বা অপমানিত হবে না। 18আল্লাহ্‌, যিনি আসমান সৃষ্টি করেছেন, তিনিই মাবুদ; যিনি দুনিয়ার আকার দিয়েছেন ও তৈরী করেছেন, তিনিই তা স্থাপন করেছেন। তিনি বাস করবার অযোগ্য করে দুনিয়া সৃষ্টি করেন নি, বরং লোকেরা যাতে বাস করতে পারে সেইভাবেই তা সৃষ্টি করেছেন। তিনি বলছেন, “আমিই আল্লাহ্‌, আর কেউ নয়। 19কোন অন্ধকার দেশের কোন জায়গা থেকে আমি গোপনে কথা বলি নি। ইয়াকুবের বংশকে আমি বলি নি, ‘তোমরা মিথ্যাই আমাকে ডাক।’ আমি মাবুদ ন্যায্য কথা বলি; যা ঠিক তা-ই ঘোষণা করি।

20“ওহে অন্যান্য জাতির বেঁচে থাকা লোকেরা, তোমরা এক সংগে জমায়েত হয়ে এস। যারা কাঠের মূর্তি বয়ে নিয়ে বেড়ায় আর এমন দেবতার কাছে মুনাজাত করে যে উদ্ধার করতে পারে না তারা কিছুই জানে না। 21এস, তোমাদের পক্ষে যা বলবার আছে তা উপস্থিত কর; তোমরা একসংগে পরামর্শ কর। এই ঘটনা যে ঘটবে তা কে আগে বলেছেন? সেই দূর অতীতে কে তা আগে ঘোষণা করেছেন? আমি আল্লাহ্‌ই কি তা করি নি? আমি ছাড়া আর মাবুদ নেই; আমি ন্যায়বান আল্লাহ্‌, আমি উদ্ধারকর্তা। আমি ছাড়া আর কোন মাবুদ নেই।

22“হে দুনিয়ার সব শেষ সীমাগুলো, আমার দিকে ফেরো এবং উদ্ধার পাও, কারণ আমিই আল্লাহ্‌, আর কেউ মাবুদ নয়। 23আমি নিজের নামেই কসম খেয়েছি, আমার ন্যায্যতায় আমি এই কথা বলেছি, আর তা বাতিল হবে না। সেই কথা হল, আমার সামনে প্রত্যেকে হাঁটু পাতবে এবং আমার অধীনতা স্বীকার করবে। 24তারা আমার বিষয় বলবে, ‘কেবল মাবুদের মধ্যেই সততা ও কুদরত আছে।’ লোকেরা আমার কাছে আসবে এবং যারা আমার উপর রেগে আছে তারা লজ্জিত হবে। 25আমার মধ্যেই ইসরাইলের সমস্ত বংশ নির্দোষ বলে প্রমাণিত হবে এবং তারা আমার প্রশংসা করবে।”