পয়দায়েশ 7

মহাবন্যা

1এর পরে মাবুদ নূহ্‌কে আবার বললেন, “তুমি ও তোমার পরিবারের সবাই জাহাজে উঠবে। আমি দেখতে পাচ্ছি, এখনকার লোকদের মধ্যে কেবল তুমিই সৎ আছ। 2তুমি পাক পশুর প্রত্যেক জাতের মধ্য থেকে স্ত্রী-পুরুষ মিলিয়ে সাত জোড়া করে তোমার সংগে নেবে, আর নাপাক পশুর মধ্য থেকেও স্ত্রী-পুরুষ মিলিয়ে এক জোড়া করে নেবে। 3আকাশে উড়ে বেড়ায় এমন পাক পাখীদের মধ্য থেকেও স্ত্রী-পুরুষ মিলিয়ে সাত জোড়া করে তোমার সংগে নেবে। দুনিয়ার উপর তাদের বংশ বাঁচিয়ে রাখবার জন্যই তুমি তা করবে। 4আমি আর সাত দিন পরে দুনিয়ার উপরে বৃষ্টি পড়বার ব্যবস্থা করব। তাতে চল্লিশ দিন আর চল্লিশ রাত ধরে বৃষ্টি পড়তে থাকবে। আমি ভূমিতে যে সব প্রাণী সৃষ্টি করেছি তাদের প্রত্যেকটিকে দুনিয়ার উপর থেকে মুছে ফেলব।” 5মাবুদের হুকুম মতই নূহ্‌সব কাজ করলেন।

6দুনিয়াতে বন্যা শুরু হওয়ার সময় নূহের বয়স ছিল ছ’শো বছর। 7বন্যা থেকে রক্ষা পাবার জন্য নূহ, তাঁর স্ত্রী, তাঁর ছেলেরা এবং ছেলেদের স্ত্রীরা সেই জাহাজে গিয়ে উঠলেন। 8-9 আল্লাহ্‌নূহ্‌কে হুকুম দেবার সময় যা বলেছিলেন সেইভাবে পাক ও নাপাক পশু, পাখী ও বুকে-হাঁটা প্রাণীরা স্ত্রী-পুরুষ মিলে জোড়ায় জোড়ায় সেই জাহাজে নূহের কাছে গিয়ে উঠল। 10সেই সাত দিন পার হয়ে গেলে পর দুনিয়াতে বন্যা হল। 11নূহের বয়স যখন ছ’শো বছর চলছিল, সেই বছরের দ্বিতীয় মাসের সতেরো দিনের দিন মাটির নীচের সমস্ত পানি হঠাৎ বের হয়ে আসতে লাগল আর আকাশেও যেন ফাটল ধরল। 12চল্লিশ দিন আর চল্লিশ রাত ধরে দুনিয়ার উপরে বৃষ্টি পড়তে থাকল।

13যেদিন বৃষ্টি পড়তে শুরু করল সেই দিন নূহ, তাঁর স্ত্রী, তাঁর ছেলে সাম, হাম ও ইয়াফস এবং তাঁর তিন ছেলের স্ত্রীরা গিয়ে জাহাজে উঠেছিলেন। 14তাঁদের সংগে প্রত্যেক জাতের এক এক জোড়া করে বন্য ও গৃহপালিত পশু, বুকে-হাঁটা প্রাণী আর সব রকম পাখীও উঠেছিল। 15শ্বাস-প্রশ্বাস নিয়ে বেঁচে থাকা সব প্রাণীই জোড়ায় জোড়ায় নূহের কাছে জাহাজে গিয়ে উঠেছিল। 16আল্লাহ্‌নূহ্‌কে হুকুম দেবার সময় যা বলেছিলেন সেই অনুসারে স্ত্রী-পুরুষ মিলেই তারা উঠেছিল। এর পর মাবুদ জাহাজের দরজাটা বন্ধ করে দিলেন।

17তারপর থেকে চল্লিশ দিন ধরে দুনিয়াতে বন্যার পানি বেড়েই চলল। পানি বেড়ে যাওয়াতে জাহাজটা মাটি ছেড়ে উপরে ভেসে উঠল। 18পরে দুনিয়ার উপরে পানি আরও বেড়ে গেল এবং জাহাজটা পানির উপরে ভাসতে লাগল। 19দুনিয়ার উপরে পানি কেবল বেড়েই চলল; ফলে যেখানে যত বড় বড় পাহাড় ছিল সব ডুবে গেল। 20সমস্ত পাহাড়-পর্বত ডুবিয়ে পানি আরও পনেরো হাত উপরে উঠে গেল।

21এর ফলে মাটির উপরে ঘুরে বেড়ানো সমস্ত প্রাণী, পাখী, গৃহপালিত আর বন্য পশু, ঝাঁক বেঁধে চরে বেড়ানো ছোট ছোট প্রাণী এবং সমস্ত মানুষ মারা গেল। 22শুকনা মাটির উপর যে সব প্রাণী বাস করত, অর্থাৎ শ্বাস-প্রশ্বাস নিয়ে যারা বেঁচে ছিল তারা সবাই মরে গেল। 23আল্লাহ্‌এইভাবে ভূমির সমস্ত প্রাণী দুনিয়ার উপর থেকে মুছে ফেললেন। তাতে মানুষ, পশু, বুকে-হাঁটা প্রাণী এবং আকাশের পাখী দুনিয়ার উপর থেকে মুছে গেল। কেবল নূহ্‌এবং তাঁর সংগে যাঁরা জাহাজে ছিলেন তাঁরাই বেঁচে রইলেন। 24দুনিয়া একশো পঞ্চাশ দিন পানিতে ডুবে রইল।