উযায়ের 9

হযরত উযায়ের (আঃ)-এর মুনাজাত

1এই সব কাজ শেষ হয়ে গেলে পর নেতারা আমার কাছে এসে বললেন, “বনি-ইসরাইলরা এবং তাদের ইমামেরা ও লেবীয়রা তাদের দেশে বাসকারী অন্যান্য জাতিদের কাছ থেকে নিজেদের আলাদা করে রাখে নি। তারা কেনানীয়, হিট্টীয়, পরিষীয়, যিবূষীয়, অম্মোনীয়, মোয়াবীয়, মিসরীয় ও আমোরীয়দের মত জঘন্য কাজ করছে। 2তারা নিজেদের ও তাদের ছেলেদের জন্য স্ত্রী হিসাবে ঐ সব জাতির মেয়েদের গ্রহণ করেছে, আর এইভাবে তাদের পবিত্র জাতিকে সেই জাতিদের সংগে মিশিয়ে ফেলেছে। এমন কি, নেতারা এবং উঁচু পদের কর্মচারীরাই প্রথমে এই বেঈমানীর পথ দেখিয়েছেন।”

3এই কথা শুনে আমি মনের কষ্টে আমার পরনের কাপড় ছিঁড়লাম এবং আমার মাথার চুল ও দাড়ি ছিঁড়ে হতভম্ব হয়ে বসে রইলাম। 4বন্দীদশা থেকে ফিরে আসা এই লোকদের বেঈমানীর ব্যাপারে যারা ইসরাইলের আল্লাহ্‌র কালাম মনে করে কেঁপে উঠল তারা প্রত্যেকে আমার কাছে এসে জমায়েত হল। সন্ধ্যাবেলার কোরবানীর সময় পর্যন্ত আমি সেখানে হতভম্ব হয়ে বসে রইলাম।

5তারপর সন্ধ্যাবেলার কোরবানীর সময়ে আমি ভাংগা দিলের কষ্ট পাওয়া থেকে ফিরলাম এবং সেই ছেঁড়া কাপড় সুদ্ধই হাঁটু পেতে আমার মাবুদ আল্লাহ্‌র সামনে দু’হাত বাড়িয়ে দিয়ে এই মুনাজাত করলাম, 6“হে আমার আল্লাহ্‌, তোমার দিকে আমার মুখ তুলতে আমি খুব লজ্জা বোধ করছি, কারণ আমাদের গুনাহ্‌আমাদের মাথা ছাড়িয়ে উঠেছে এবং আমাদের দোষ আসমান ছুঁয়েছে। 7আমাদের পূর্বপুরুষদের সময় থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত আমরা অনেক বেশী গুনাহ্‌করেছি। আমাদের গুনাহের জন্যই আমাদের ও আমাদের বাদশাহ্‌দের এবং আমাদের ইমামদের অন্যান্য বাদশাহ্‌দের হাতে মৃত্যু, বন্দীদশা, লুটপাট এবং অসম্মান হয়েছে, আর আজও সেই অবস্থা রয়েছে।

8“কিন্তু এখন অল্প সময়ের জন্য আমাদের মাবুদ আল্লাহ্‌রহমত দান করে আমাদের কিছু লোককে জীবিত রেখেছেন এবং তাঁর পবিত্র দেশে আমাদের একটা স্থায়ী জায়গা দিয়েছেন। এইভাবে আমাদের আল্লাহ্‌আমাদের আনন্দ ফিরিয়ে দিয়েছেন এবং আমাদের গোলামীর অবস্থায় আমাদের একটু প্রাণ জুড়িয়েছেন। 9আমরা গোলাম হলেও আমাদের গোলামীর সময় আমাদের আল্লাহ্‌আমাদের ত্যাগ করেন নি। পারস্যের বাদশাহ্‌দের সামনে তিনি আমাদের প্রতি বিশ্বস্ত ব্যবহার করেছেন। তিনি আমাদের জাগিয়ে তুলেছেন যাতে আবার আমরা আমাদের আল্লাহ্‌র ঘর তৈরী ও তার ভাংগা জায়গা মেরামত করতে পারি। তিনি এহুদা ও জেরুজালেমে আমাদের নিরাপদে থাকবার ব্যবস্থা করেছেন।

10-11 “কিন্তু এখন, হে আমাদের আল্লাহ্‌, এর পর আমরা কি বলতে পারি? তুমি তোমার গোলাম নবীদের মধ্য দিয়ে যে সব হুকুম দিয়েছিলে তা তো আমরা অগ্রাহ্য করেছি। তুমি বলেছিলে, ‘যে দেশ তোমরা অধিকার করবার জন্য যাচ্ছ তা সেখানকার লোকদের নাপাকীর কারণে নাপাক হয়েছে। তাদের জঘন্য কাজ দিয়ে তারা দেশের এক সীমা থেকে অন্য সীমা পর্যন্ত অপবিত্রতায় ভরে তুলেছে। 12কাজেই তোমাদের মেয়েদের তাদের ছেলেদের সংগে বিয়ে দিয়ো না কিংবা তোমাদের ছেলেদের জন্য তাদের মেয়েদের নিয়ো না এবং কখনও তাদের উপকার কিংবা উন্নতির চেষ্টা কোরো না। এতে তোমরা শক্তিশালী হবে এবং জমির ভাল ভাল জিনিস খেতে পারবে আর চিরস্থায়ী অধিকার হিসাবে দেশটা তোমাদের ছেলেমেয়েদের জন্য রেখে যেতে পারবে।’

13“আমাদের খারাপ কাজ ও আমাদের মহাগুনাহের ফলেই আমাদের উপর এই সব ঘটেছে, কিন্তু তবুও হে আমাদের আল্লাহ্‌, আমাদের গুনাহের পাওনা অনুসারে তুমি আমাদের কম শাস্তি দিয়েছ এবং আমাদের কিছু লোককে বেঁচে থাকতে দিয়েছ। 14আমরা কি আবার তোমার হুকুম অমান্য করে সেই সব জঘন্য কাজ করা লোকদের সংগে বিয়ের সম্বন্ধ করব? তা করলে তো তুমি আমাদের উপর এমন রাগ করবে যার জন্য তুমি আমাদের ধ্বংস করে ফেলবে এবং আমাদের কাউকে বেঁচে থাকতে দেবে না। 15হে ইসরাইলের মাবুদ আল্লাহ্‌, তুমি ন্যায়বান। আমরা আজ পর্যন্ত কিছু লোক বেঁচে আছি। তোমার সামনে আমরা সকলে গুনাহ্‌গার, আর সেইজন্য আমাদের মধ্যে কেউই তোমার সামনে দাঁড়াবার উপযুক্ত নই।”