ইহিস্কেল 11

ইসরাইলের নেতাদের শাস্তি

1তারপর মাবুদের রূহ্‌আমাকে তুলে নিয়ে বায়তুল-মোকাদ্দসের পূর্ব দিকের দরজার কাছে আনলেন। সেখানে দরজায় ঢুকবার পথে পঁচিশজন পুরুষলোক ছিল, আর আমি তাদের মধ্যে অসূরের ছেলে যাসনিয় ও বনায়ের ছেলে প্লটিয়কে দেখলাম; তারা ছিল লোকদের নেতা। 2মাবুদ আমাকে বললেন, “হে মানুষের সন্তান, এরাই সেই লোক যারা শহরের মধ্যে কুমতলব করছে আর খারাপ পরামর্শ দিচ্ছে। 3তারা বলছে, ‘ঘর-বাড়ী তৈরী করবার সময় কি হয় নি? এই শহরটা যেন রান্নার পাত্র আর আমরা হচ্ছি গোশ্‌ত।’ 4কাজেই হে মানুষের সন্তান, তুমি এদের বিরুদ্ধে নবী হিসাবে কথা বল, জ্বী, নবী হিসাবে কথা বল।”

5তারপর মাবুদের রূহ্‌আমার উপরে আসলেন, আর তিনি আমাকে এই কথা বলতে বললেন, “মাবুদ বলছেন, ‘হে বনি-ইসরাইলরা, তোমরা ঐ কথা বলছ, কিন্তু তোমাদের মনে কি আছে তা আমি জানি। 6তোমরা এই শহরের অনেক লোককে হত্যা করেছ এবং মরা লোক দিয়ে রাস্তাগুলো ভরে ফেলেছ।’

7“সেইজন্য আল্লাহ্‌মালিক বলছেন, ‘সত্যি এই শহরটা রান্নার পাত্র, কিন্তু যে লোকগুলোকে তোমরা শহরে হত্যা করেছ সেগুলোই গোশ্‌ত; আর আমি সেখান থেকে তোমাদের তাড়িয়ে বের করে দেব। 8যে যুদ্ধকে তোমরা ভয় কর সেই যুদ্ধই আমি তোমাদের বিরুদ্ধে আনব। 9আমি শহর থেকে তোমাদের তাড়িয়ে বের করে বিদেশীদের হাতে তুলে দেব এবং তোমাদের শাস্তি দেব। 10তোমরা যুদ্ধে মারা পড়বে; ইসরাইলের সীমানায় আমি তোমাদের সবাইকে শাস্তি দেব। তখন তোমরা জানবে যে, আমিই মাবুদ। 11এই শহর তোমাদের জন্য পাত্রও হবে না আর তোমরাও তার মধ্যেকার গোশ্‌ত হবে না; ইসরাইলের সীমানায় আমি তোমাদের সবাইকে শাস্তি দেব। 12তখন তোমরা জানবে যে, আমিই মাবুদ। তোমরা আমার নিয়ম মত চল নি কিংবা আমার শরীয়তও পালন কর নি বরং তোমাদের চারপাশের জাতিগুলোর নিয়ম অনুসারে চলেছ।’ ”

বন্দীদের সান্ত্বনা

13আমি যখন নবী হিসাবে কথা বলছিলাম তখন বনায়ের ছেলে প্লটিয় মারা গেল। তখন আমি উবুড় হয়ে পড়ে আবেগের সংগে জোরে জোরে বললাম, “হায়, আল্লাহ্‌মালিক! তুমি কি ইসরাইলের বাকী লোকদের সবাইকে শেষ করে দেবে?”

14তখন মাবুদের এই কালাম আমার উপর নাজেল হল, 15“হে মানুষের সন্তান, তোমার ভাইদের, তোমার নিজের লোকদের, অর্থাৎ বন্দীদশায় থাকা সমস্ত বনি-ইসরাইলদের সম্বন্ধে জেরুজালেমের লোকেরা বলছে, ‘তারা মাবুদের দেশ থেকে দূরে চলে গেছে; এই দেশ তো অধিকার হিসাবে আমাদেরই দেওয়া হয়েছে।’

16“সেইজন্য আমি আল্লাহ্‌মালিক যা বলছি তা তুমি তোমার লোকদের বল যে, আমি যদিও অন্যান্য জাতিদের মধ্যে তাদের পাঠিয়ে দিয়েছি এবং দেশে দেশে ছড়িয়ে দিয়েছি তবুও যে সব দেশে তারা গেছে সেখানেও এই অল্পকালের জন্য আমিই তাদের পবিত্র স্থান হয়েছি।

17“কাজেই তুমি তাদের বল যে, আল্লাহ্‌মালিক বলছেন, জাতিদের মধ্য থেকে আমি তাদের জমায়েত করব; যে সব দেশে তারা ছড়িয়ে পড়েছে সেখান থেকে তাদের ফিরিয়ে আনব আর ইসরাইল দেশটা আবার আমি তাদের ফিরিয়ে দেব।

18“তারা সেখানে ফিরে গিয়ে সব বাজে মূর্তি ও জঘন্য প্রতিমাগুলো দূর করে দেবে। 19আমি তাদের এমন দিল দেব যা কেবল আমারই দিকে আসক্ত থাকবে, আর আমি তাদের মধ্যে নতুন রূহ্‌দেব; আমি তাদের কঠিন দিল সরিয়ে দিয়ে নরম দিল দেব। 20তাহলে তারা আমার নিয়ম মত চলবে এবং আমার শরীয়ত যত্নের সংগে পালন করবে। তারা আমার বান্দা হবে এবং আমি তাদের আল্লাহ্‌হব। 21কিন্তু যাদের অন্তর বাজে মূর্তি ও জঘন্য প্রতিমাগুলোর দিকে, তাদের কাজের ফল আমি তাদের উপর ঢেলে দেব। আমি আল্লাহ্‌মালিক এই কথা বলছি।”

আল্লাহ্‌তা’লার মহিমা শহর ত্যাগ করল

22এর পর কারুবীরা তাঁদের ডানা মেলে দিলেন; তাঁদের পাশে ছিল সেই চাকাগুলো, আর ইসরাইলের আল্লাহ্‌র মহিমা তাঁদের উপরে ছিল। 23মাবুদের মহিমা শহরের মধ্য থেকে উঠে শহরের পূর্ব দিকের পাহাড়ের উপরে গিয়ে থামল। 24তারপর আল্লাহ্‌র রূহ্‌আমাকে তুলে নিলেন এবং তাঁর দেওয়া দর্শনের মধ্য দিয়ে আবার ব্যাবিলনে বন্দীদের কাছে নিয়ে গেলেন।

যে দর্শন আমি দেখছিলাম এর পর তা শেষ হয়ে গেল। 25মাবুদ আমাকে যা যা দেখিয়েছিলেন তা সবই আমি বন্দীদের কাছে বললাম।