ইফিষীয় 2

মৃত্যু থেকে জীবন লাভ

1অবাধ্যতা আর গুনাহের দরুন তোমরা মৃত ছিলে। 2দুনিয়ার চিন্তাধারা অনুসারে তোমরাও এক সময় সেই অবাধ্যতা আর গুনাহের মধ্যে চলাফেরা করতে। যে রূহ্‌আসমানের ক্ষমতাশালীদের বাদশাহ্‌সেই দুষ্ট রূহ্‌আল্লাহ্‌র অবাধ্য লোকদের মধ্যে কাজ করছে, আর তোমরা সেই রূহের পিছনে পিছনে চলতে। 3আমরা সবাই আমাদের গুনাহ্‌-স্বভাবের কামনা পূর্ণ করে সেই লোকদের মধ্যে এক সময় জীবন কাটাতাম। গুনাহ্‌-স্বভাব থেকে যে সব ইচ্ছা এবং চিন্তা জাগে আমরা সেই অনুসারে কাজ করতাম। এই স্বভাবের জন্য আমরাও অন্য সকলের মত আল্লাহ্‌র গজবের অধীন ছিলাম। 4কিন্তু আল্লাহ্‌মমতায় পূর্ণ; তিনি আমাদের খুব মহব্বত করেন। 5এইজন্য অবাধ্যতার দরুন যখন আমরা মৃত অবস্থায় ছিলাম তখন মসীহের সংগে তিনি আমাদের জীবিত করলেন। আল্লাহ্‌র রহমতে তোমরা নাজাত পেয়েছ। 6আমরা মসীহ্‌ঈসার সংগে যুক্ত হয়েছি বলে আল্লাহ্‌আমাদের মসীহের সংগে জীবিত করে মসীহের সংগেই বেহেশতে বসিয়েছেন। 7তিনি এই কাজ করেছেন যেন তিনি তাঁর তুলনাহীন অশেষ রহমত আগামী যুগ যুগ ধরে দেখাতে পারেন। তিনি মসীহ্‌ঈসার মধ্য দিয়ে আমাদের উপর দয়া করে যা করেছেন তাতেই তাঁর এই রহমত প্রকাশ পেয়েছে। 8আল্লাহ্‌র রহমতে ঈমানের মধ্য দিয়ে তোমরা নাজাত পেয়েছ। এটা তোমাদের নিজেদের দ্বারা হয় নি, তা আল্লাহ্‌রই দান। 9এটা কাজের ফল হিসাবে দেওয়া হয় নি, যেন কেউ গর্ব করতে না পারে। 10আমরা আল্লাহ্‌র হাতের তৈরী। আল্লাহ্‌মসীহ্‌ঈসার সংগে যুক্ত করে আমাদের নতুন করে সৃষ্টি করেছেন যাতে আমরা সৎ কাজ করি। এই সৎ কাজ তিনি আগেই ঠিক করে রেখেছিলেন, যেন আমরা তা করে জীবন কাটাই।

হযরত ঈসা মসীহের মধ্যে সকলেই এক

11জন্মের দিক থেকে তোমরা তো অ-ইহুদী। হাত দিয়ে শরীরের মধ্যে যাদের খৎনা করানো হয়েছে, অর্থাৎ যারা নিজেদের খৎনা-করানো লোক বলে থাকে তারা তোমাদের খৎনা-না-করানো লোক বলে। 12মনে রেখো, আগে তোমরা মসীহের কাছ থেকে আলাদা ছিলে; জাতি হিসাবে বনি-ইসরাইলদের যে অধিকার তোমরা সেই অধিকারের বাইরে ছিলে; আল্লাহ্‌ইসরাইল জাতির জন্য যে কয়টি ওয়াদাযুক্ত ব্যবস্থা করেছিলেন তার সংগে তোমাদের কোন সম্বন্ধ ছিল না; তোমাদের কোন আশা ছিল না; আর এই দুনিয়াতে তোমরা আল্লাহ্‌ছাড়াই ছিলে। 13তোমরা এক কালে দূরে ছিলে, কিন্তু মসীহ্‌ঈসার সংগে যুক্ত হয়েছ বলে তোমাদের এখন তাঁর রক্তের দ্বারা কাছে আনা হয়েছে।

14-15 তিনিই আমাদের শান্তি। ইহুদী ও অ-ইহুদী, এই দুইকে তিনিই এক করেছেন। তিনি তাঁর ক্রুশের উপরে হত্যা করা শরীরের মধ্য দিয়ে সমস্ত হুকুম ও নিয়ম সুদ্ধ মূসার শরীয়তের শক্তিকে বাতিল করেছেন। এইভাবেই যে শত্রুতার ভাব এই দু’য়ের মধ্যে দেওয়ালের মত হয়ে দাঁড়িয়ে ছিল তা তিনি ভেংগে ফেলেছেন। তিনি এটা করেছিলেন যেন এই দু’টিকে দিয়ে তিনি নিজেই একটি নতুন মানুষ সৃষ্টি করতে পারেন, আর এইভাবেই যেন সেই দু’য়ের মধ্যে শান্তি হয়। 16এটাও তাঁর উদ্দেশ্য ছিল যে, তাঁর ক্রুশীয় মৃত্যুর মধ্য দিয়ে সেই দু’টিকে তিনি এক শরীরে আল্লাহ্‌র সংগে আবার মিলিত করেন, কারণ এই দু’য়ের মধ্যে যে শত্রুতার ভাব ছিল তা তিনি তাঁর ক্রুশীয় মৃত্যুর দ্বারা ধ্বংস করেছেন। 17তোমরা যারা দূরে ছিলে এবং তারা যারা কাছে ছিল, সকলের কাছেই তিনি এসে শান্তির সুসংবাদ তবলিগ করেছিলেন। 18তাঁরই মধ্য দিয়ে একই পাক-রূহের দ্বারা পিতার কাছে যাবার অধিকার আমাদের সকলের আছে।

19এইজন্য তোমরা আর অচেনাও নও, বিদেশীও নও; কিন্তু আল্লাহ্‌র বান্দাদের সংগে তোমরাও তাঁর রাজ্যের ও তাঁর পরিবারের লোক হয়েছ। 20সাহাবী আর নবীরা হলেন ভিত্তি, আর সেই ভিত্তির প্রধান পাথর মসীহ্‌ঈসা নিজে। সেই ভিত্তির উপরেই তোমাদের গাঁথা হয়েছে। 21মসীহের সংগে যোগ থাকবার দরুন দালানের সমস্ত অংশ একসংগে যুক্ত হয়ে প্রভুর থাকবার জন্য একটা পবিত্র ঘর গড়ে উঠছে। 22তোমরা তাঁরই সংগে যুক্ত হয়েছ এবং সেইজন্য তোমাদেরও একসংগে গেঁথে তোলা হচ্ছে, যেন পাক-রূহের মধ্য দিয়ে তোমরা আল্লাহ্‌র থাকবার জায়গা হতে পার।