দ্বিতীয় বিবরণ 26

প্রথমে তোলা ফসল ও দশমাংশ

1“তোমাদের মাবুদ আল্লাহ্‌যে দেশটা সম্পত্তি হিসাবে তোমাদের দিতে যাচ্ছেন তোমরা সেটা দখল করে যখন সেখানে বাস করতে থাকবে, 2তখন তোমাদের মাবুদ আল্লাহ্‌র দেওয়া সেই দেশের জমিতে তোমরা যে সব ফসল ফলাবে তার প্রথমে তোলা কিছু ফসল টুকরিতে রাখবে। তোমাদের মাবুদ আল্লাহ্‌নিজেকে প্রকাশ করবার জন্য যে জায়গাটা তাঁর বাসস্থান হিসাবে বেছে নেবেন সেই ফসল তোমরা সেখানে নিয়ে যাবে। 3তখন যে ইমাম থাকবে তোমরা প্রত্যেকে তাকে বলবে, ‘আপনার মাবুদ আল্লাহ্‌র কাছে আজ আমি স্বীকার করছি যে, তিনি যে দেশটা আমাদের দেবেন বলে আমাদের পূর্বপুরুষদের কাছে কসম খেয়েছিলেন সেই দেশে আমি এসে গেছি।’ 4তখন ইমাম তোমাদের হাত থেকে সেই সব টুকরি নিয়ে তোমাদের মাবুদ আল্লাহ্‌র কোরবানগাহের সামনে রাখবে। 5তারপর তোমরা প্রত্যেকে তোমাদের মাবুদ আল্লাহ্‌র সামনে বলবে, ‘আমার পূর্বপুরুষ ছিলেন একজন ইরামীয় যাযাবর। তিনি মাত্র কয়েকজন লোক নিয়ে মিসর দেশে চলে গিয়েছিলেন এবং সেখানে বাস করবার সময় তাঁর মধ্য দিয়ে একটি মহান ও শক্তিশালী জাতির সৃষ্টি হয়েছিল যার লোকসংখ্যা ছিল অনেক। 6কিন্তু মিসরীয়রা আমাদের সংগে ভাল ব্যবহার করে নি। তারা আমাদের কষ্ট দিয়েছিল এবং আমাদের উপর একটা কঠিন পরিশ্রমের বোঝা চাপিয়ে দিয়েছিল। 7তখন আমরা আমাদের পূর্বপুরুষদের মাবুদ আল্লাহ্‌র কাছে কান্নাকাটি করলাম। তিনি আমাদের কান্না শুনলেন, আমাদের কষ্ট ও পরিশ্রম দেখলেন; আরও দেখলেন আমাদের উপর কি রকম জুলুম করা হচ্ছে। 8সেইজন্য তিনি তাঁর কঠোর এবং শক্তিশালী হাত বাড়িয়ে ভয় জাগানো কাজ এবং অলৌকিক চিহ্ন ও কুদরতি দেখিয়ে মিসর দেশ থেকে আমাদের বের করে আনলেন। 9তিনি আমাদের এখানে এনেছেন এবং দুধ আর মধুতে ভরা এই দেশ আমাদের দিয়েছেন। 10সেইজন্য হে মাবুদ, তোমার দেওয়া জমির প্রথমে তোলা ফসল আমি তোমার কাছেই এনেছি।’ এই বলে তোমাদের মাবুদ আল্লাহ্‌র সামনে তোমরা তোমাদের টুকরি রাখবে এবং তাঁকে সেজদা করবে। 11তোমাদের এবং তোমাদের পরিবারকে তোমাদের মাবুদ আল্লাহ্‌যে সব ভাল ভাল জিনিস দিয়ে দোয়া করেছেন তা নিয়ে তোমরা, লেবীয়রা এবং তোমাদের মধ্যেকার বিদেশী বাসিন্দারা আনন্দ করবে।

12“প্রত্যেক তৃতীয় বছরে তোমাদের সব ফসলের দশ ভাগের এক ভাগ আদায় করা শেষ হলে পর সেগুলো তোমরা লেবীয়, বিদেশী বাসিন্দা, এতিম এবং বিধবাদের দেবে। তাতে ঐ সব লোকেরা তোমাদের দেশের মধ্যে খাওয়া-দাওয়া করে তৃপ্ত হবে। 13তারপর তোমরা প্রত্যেকে তোমাদের মাবুদ আল্লাহ্‌কে বলবে, ‘আমি তোমার হুকুম অনুসারে আমার আয় থেকে পবিত্র অংশটা বাড়ী থেকে বের করে এনে লেবীয়, বিদেশী বাসিন্দা, এতিম এবং বিধবাদের দিয়েছি। তোমার হুকুম আমি অমান্য করি নি কিংবা সেগুলোর একটাও আমি ভুলে যাই নি। 14মৃতদের জন্য শোক প্রকাশের অবস্থায় আমি পবিত্র অংশ থেকে কোন কিছু খাই নি, কিংবা নাপাক অবস্থায় তা বাড়ী থেকে বের করি নি, কিংবা তা থেকে কোন অংশ মৃত লোকদের উদ্দেশে দান করি নি। আমি আমার মাবুদ আল্লাহ্‌র কথামত কাজ করেছি। তোমার হুকুম করা সব কিছুই আমি করেছি। 15হে মাবুদ, তোমার পবিত্র বাসস্থান বেহেশত থেকে তুমি নীচে তাকিয়ে দেখ আর তোমার বান্দাদের, অর্থাৎ বনি-ইসরাইলদের তুমি দোয়া কর। আমাদের পূর্বপুরুষদের কাছে তোমার কসম খাওয়া ওয়াদা অনুসারে দুধ আর মধুতে ভরা যে দেশ তুমি আমাদের দিয়েছ সেই দেশকেও দোয়া কর।’

মাবুদের হুকুম পালন করবার নির্দেশ

16“তোমাদের মাবুদ আল্লাহ্‌আজ তোমাদের এই সমস্ত নিয়ম ও নির্দেশ মেনে চলবার হুকুম দিচ্ছেন। তোমরা সতর্ক হয়ে সমস্ত মনপ্রাণ দিয়ে তা পালন করবে। 17আজকেই তোমরা স্বীকার করেছ যে, আল্লাহ্‌ই তোমাদের মাবুদ আর তাঁর পথেই তোমরা চলবে। তোমরা স্বীকার করেছ যে, তাঁর নিয়ম, হুকুম ও নির্দেশ তোমরা পালন করবে এবং তাঁর কথামতই চলবে। 18আর মাবুদও আজকে ঘোষণা করেছেন যে, তাঁর ওয়াদা অনুসারে তোমরা তাঁরই বান্দা এবং তাঁর নিজের বিশেষ সম্পত্তি হয়েছ। তাঁর সব হুকুম তোমাদের মেনে চলতে হবে। 19তিনি ঘোষণা করেছেন যে, প্রশংসা, সুনাম ও গৌরবের দিক থেকে তাঁর সৃষ্ট অন্যান্য জাতিদের উপরে তিনি তোমাদের স্থান দেবেন এবং তোমাদের মাবুদ আল্লাহ্‌র ওয়াদা অনুসারে তোমরা হবে তাঁর উদ্দেশ্যে একটা পবিত্র জাতি।”