২ খান্দাননামা 31

1ঈদের সব কিছু শেষ হবার পরে সেখানে উপস্থিত বনি-ইসরাইলরা বের হয়ে এহুদার শহরগুলোতে গিয়ে পূজার পাথরগুলো, আশেরা-খুঁটিগুলো, পূজার উঁচু স্থান ও বেদীগুলো একেবারে ধ্বংস করে দিল। তারা এহুদা, বিন্‌ইয়ামীন, আফরাহীম ও মানশা-গোষ্ঠীর সমস্ত এলাকায় একই কাজ করল। এই সব ধ্বংস করবার পর বনি-ইসরাইলরা গ্রামে ও শহরে নিজের নিজের জায়গায় ফিরে গেল।

এবাদতের জন্য দান

2পোড়ানো-কোরবানী ও যোগাযোগ-কোরবানী দেবার জন্য, এবাদত-কাজের জন্য এবং আল্লাহ্‌র ঘরে শুকরিয়া-কাওয়ালী ও প্রশংসা-কাওয়ালী গাইবার জন্য হিষ্কিয় ইমাম ও লেবীয়দের প্রত্যেকের কাজ অনুসারে তাদের বিভিন্ন দলকে নিযুক্ত করলেন। 3মাবুদের শরীয়তে যেমন লেখা আছে সেইমত সকাল ও সন্ধ্যার পোড়ানো-কোরবানীর জন্য এবং বিশ্রামবার, অমাবস্যা এবং নির্দিষ্ট ঈদের সময়কার পোড়ানো-কোরবানীর জন্য বাদশাহ্‌তাঁর নিজের সম্পত্তি থেকে দান করলেন। 4ইমাম ও লেবীয়রা যাতে মাবুদের শরীয়ত পালন করবার ব্যাপারে নিজেদের সম্পূর্ণভাবে ব্যস্ত রাখতে পারেন সেইজন্য তাঁদের পাওনা অংশ দিতে তিনি জেরুজালেমে বাসকারী লোকদের হুকুম দিলেন। 5এই হুকুম বের হবার সংগে সংগে বনি-ইসরাইলরা তাদের ফসল, নতুন আংগুর-রস, তেল ও মধুর প্রথম অংশ এবং ক্ষেতে আর যা কিছু জন্মায় তারও প্রথম অংশ প্রচুর পরিমাণে দান করল। এছাড়া তারা সব কিছুর দশ ভাগের একভাগ আনল এবং তা পরিমাণে অনেক হল। 6ইসরাইল ও এহুদার যে সব লোক এহুদার গ্রাম ও শহরগুলোতে বাস করত তারাও তাদের গরু, ভেড়া ও ছাগলের পালের দশ ভাগের এক ভাগ আনল এবং তাদের মাবুদ আল্লাহ্‌র উদ্দেশ্যে পবিত্র করে রাখা জিনিসের দশ ভাগের একভাগ এনে কতগুলো স্তূপ করল। 7তৃতীয় মাসে এই কাজ শুরু করে তারা সপ্তম মাসে শেষ করল। 8হিষ্কিয় ও তাঁর কর্মচারীরা এসে সেই সতূপগুলো দেখে মাবুদের প্রশংসা করলেন এবং তাঁর বান্দা বনি-ইসরাইলদের প্রশংসা করলেন।

9হিষ্কিয় সেই স্তূপগুলোর কথা ইমাম ও লেবীয়দের জিজ্ঞাসা করলেন। 10এতে সাদোকের বংশের অসরিয় নামে প্রধান ইমাম জবাবে বললেন, “মাবুদের ঘরে লোকেরা যখন তাদের দান আনতে শুরু করল তখন থেকে আমাদের খাবারও যেমন যথেষ্ট হয়েছে তেমনি বাড়তিও রয়েছে প্রচুর, কারণ মাবুদ তাঁর বান্দাদের দোয়া করেছেন, আর এই সমস্ত জিনিস অনেক বেঁচে গেছে।”

11তখন হিষ্কিয় মাবুদের ঘরে কতগুলো ভাণ্ডার-ঘর তৈরী করবার হুকুম দিলেন আর সেগুলো তৈরী করা হল। 12তারপর লোকেরা উপহার, সব জিনিসের দশ ভাগের এক ভাগ ও পবিত্র করে রাখা জিনিস বিশ্বস্তভাবে ভাণ্ডার-ঘরে আনতে লাগল। কনানিয় নামে একজন লেবীয়ের উপর ছিল এই সব জিনিসের দেখাশোনার ভার আর তাঁর ভাই শিমিয়ি তাঁর সাহায্যকারী ছিল। 13এই দু’জনের অধীনে বাদশাহ্‌হিষ্কিয় ও মাবুদের ঘরের প্রধান কর্মচারী অসরিয়ের হুকুমে যিহীয়েল, অসসিয়, নহৎ, অসাহেল, যিরীমোৎ, যোষাবদ, ইলীয়েল, যিসমখিয়, মাহৎ ও বনায় তদারক করবার ভার পেল।

14লোকদের নিজেদের ইচ্ছায় করা কোরবানীর জিনিসের ভার ছিল পূর্ব দিকের দরজার রক্ষী-লেবীয় যিম্নার ছেলে কোরির উপরে। মাবুদকে দেওয়া সব উপহার ও মহাপবিত্র জিনিস ভাগ করে দেবার ভারও ছিল তাঁর উপর। 15ইমামদের শহর ও গ্রামগুলোতে তাঁদের বিভিন্ন দল অনুসারে বয়সে ছোট বা বড় তাঁদের সংগী ইমামদের ঠিকভাবে ভাগ করে দেবার জন্য কোরির অধীনে আদন, বিন্‌ইয়ামীন, ইউসা, শময়িয়, অমরিয় ও শখনিয় বিশ্বস্তভাবে কাজ করতেন। 16এছাড়া বিভিন্ন দল অনুসারে যে সব ইমামেরা প্রতিদিনের কর্তব্য পালন করবার জন্য মাবুদের ঘরে ঢুকতেন তাদেরও খাবারের ভাগ তাঁরা দিতেন। এঁরা ছিলেন তিন বছর ও তার বেশী বয়সের পুরুষ যাঁদের নাম ইমামদের বংশ-তালিকায় লেখা ছিল। 17বংশ-তালিকায় ইমামদের নাম পিতার বংশ অনুসারে লেখা হয়েছিল এবং বিশ বছর ও তার বেশী বয়সের লেবীয়দের নাম দায়িত্ব ও বিভিন্ন দল অনুসারে লেখা হয়েছিল। 18এছাড়া তাঁদের স্ত্রী ও ছেলেমেয়েদের, অর্থাৎ গোটা সমাজের নাম বংশ-তালিকায় লেখা হয়েছিল, কারণ ইমাম ও লেবীয়রা বিশ্বস্তভাবে নিজেদের পবিত্র করেছিলেন।

19যে ইমামেরা, অর্থাৎ হারুনের যে বংশধরেরা নিজের নিজের শহর ও গ্রামের চারপাশের ক্ষেতের জমিতে বাস করতেন তাঁদের খাবারের ভাগ দেবার জন্য প্রত্যেক শহর ও গ্রামে কয়েকজন লোকের নাম উল্লেখ করে নিযুক্ত করা হয়েছিল। তাঁরা প্রত্যেক ইমামকে এবং বংশ তালিকায় লেখা প্রত্যেক লেবীয়কে খাবারের ভাগ দিতেন।

20হিষ্কিয় এহুদার সব জায়গায় এইভাবে কাজ করলেন। তাঁর মাবুদ আল্লাহ্‌র চোখে যা ভাল, ন্যায্য এবং সত্য তিনি তা-ই করলেন। 21আল্লাহ্‌র ইচ্ছামত চলবার জন্য আল্লাহ্‌র ঘরের কাজে এবং শরীয়ত পালন করবার ব্যাপারে তিনি যে কাজই করলেন না কেন তা সমস্ত দিল দিয়ে করলেন, আর সেইজন্য তিনি সফল হলেন।