১ শামুয়েল 3

হযরত শামুয়েল (আঃ)-এর প্রতি মাবুদের ডাক

1ছোট ছেলে শামুয়েল আলীর অধীনে থেকে মাবুদের এবাদত-কাজ করতে লাগলেন। সেই সময় মাবুদের কালাম খুব কমই নাজেল হত এবং তাঁর দর্শনও যখন-তখন পাওয়া যেত না।

2সেই সময় আলীর চোখ এত খারাপ হয়ে গিয়েছিল যে, তিনি প্রায় দেখতেই পেতেন না। একদিন রাতের বেলায় আলী তাঁর নিজের জায়গায় শুয়ে ছিলেন। 3আল্লাহ্‌র উদ্দেশে যে বাতি জ্বালানো থাকত তা তখনও নিভে যায় নি। শামুয়েল মাবুদের ঘরের মধ্যে শুয়ে ছিলেন। সেই ঘরে আল্লাহ্‌র সাক্ষ্য-সিন্দুকটি ছিল। 4এমন সময় মাবুদ শামুয়েলকে ডাকলেন। শামুয়েল জবাব দিলেন, “এই যে আমি।” 5এই বলে তিনি দৌড়ে আলীর কাছে গিয়ে বললেন, “এই যে আমি, আপনি আমাকে ডেকেছেন?”

আলী বললেন, “না, আমি তো তোমাকে ডাকি নি। তুমি গিয়ে শুয়ে পড়।” শামুয়েল তখন গিয়ে শুয়ে পড়লেন।

6মাবুদ আবার শামুয়েলকে ডাকলেন আর শামুয়েল উঠে আলীর কাছে গিয়ে বললেন, “এই তো আমি; আপনি কি আমাকে ডেকেছেন?”

আলী বললেন, “না বাবা, আমি তোমাকে ডাকি নি। তুমি গিয়ে শুয়ে পড়।”

7তখনও শামুয়েল মাবুদকে চিনতেন না; মাবুদ তখনও তাঁর কাছে কথা বলেন নি।

8মাবুদ তৃতীয়বার শামুয়েলকে ডাকলেন আর শামুয়েল উঠে আলীর কাছে গিয়ে বললেন, “এই যে আমি, আপনি তো আমাকে ডেকেছেন।” তখন আলী বুঝতে পারলেন মাবুদই ছেলেটিকে ডাকছিলেন। 9সেইজন্য আলী শামুয়েলকে বললেন, “তুমি গিয়ে শুয়ে পড়। এবার যদি তিনি তোমাকে ডাকেন তবে বলবে, ‘বলুন মাবুদ, আপনার গোলাম শুনছে।’ ” তখন শামুয়েল গিয়ে তাঁর নিজের জায়গায় শুয়ে পড়লেন।

10তারপর মাবুদ এসে সেখানে দাঁড়ালেন এবং অন্য বারের মত ডাকলেন, “শামুয়েল, শামুয়েল।”

তখন শামুয়েল বললেন, “বলুন, আপনার গোলাম শুনছে।”

11মাবুদ শামুয়েলকে বললেন, “দেখ, আমি বনি-ইসরাইলদের মধ্যে এমন কিছু করতে যাচ্ছি যার কথা শুনে সবাই শিউরে উঠবে। 12আমি আলীর বংশের বিষয়ে যা কিছু বলেছি তার প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত সবই আলীর বিরুদ্ধে পূর্ণ করব। 13আমি তাকে বলেছি, অন্যায়ের দরুন তার বংশকে আমি চিরকালের জন্য শাস্তি দিতে যাচ্ছি। সে জানত যে, তার ছেলেরা নিজেদের মাথায় বদদোয়া ডেকে আনছে, অথচ সে তাদের সংশোধনের চেষ্টা করে নি। 14সেইজন্য আলীর বংশের বিষয় আমি কসম খেয়ে বলছি যে, পশু-কোরবানী কিংবা অন্য কোন কোরবানীর দ্বারা তার বংশের অন্যায় কখনই ঢাকা দেওয়া যাবে না।”

15এর পর শামুয়েল সকাল পর্যন্ত শুয়ে রইলেন, তারপর উঠে মাবুদের ঘরের দরজাগুলো খুললেন; কিন্তু এই দর্শনের কথা আলীর কাছে বলতে তাঁর সাহস হল না। 16তখন আলী তাঁকে বললেন, “বাবা শামুয়েল।”

শামুয়েল জবাব দিলেন, “এই যে আমি।”

17আলী জিজ্ঞাসা করলেন, “আল্লাহ্‌তোমাকে কি বলেছেন? আমার কাছ থেকে তুমি তা লুকায়ো না। তিনি যা বলেছেন তার কিছু যদি তুমি আমার কাছ থেকে লুকাও তবে তিনি যেন তোমাকে ভীষণ শাস্তি দেন।” 18তখন শামুয়েল আলীকে সব কথা খুলে বললেন, কিছুই লুকালেন না। তা শুনে আলী বললেন, “তিনি মাবুদ; তাঁর কাছে যা ভাল মনে হয় তিনি তা-ই করুন।”

19এইভাবে শামুয়েল বেড়ে উঠতে লাগলেন আর মাবুদ তাঁর সংগে রইলেন এবং নবী হিসাবে বলা তাঁর কোন কথাই মাবুদ বিফল হতে দিতেন না। 20তাতে দান এলাকা থেকে বের্‌-শেবা পর্যন্ত সমস্ত বনি-ইসরাইলরা জানতে পারল যে, শামুয়েল মাবুদের নবী হিসাবে প্রমাণিত হয়েছেন। 21তখন থেকে মাবুদ শীলোতে আবার দর্শন দিতে লাগলেন, কারণ শীলোতে তিনি তাঁর কালামের মধ্য দিয়ে শামুয়েলের কাছে নিজেকে প্রকাশ করতেন