১ শামুয়েল 2
বিবি হান্নার মুনাজাত
1তারপর হান্না মুনাজাত করে বললেন,
1তারপর হান্না মুনাজাত করে বললেন,
11এর পর ইল্কানা রামায় তাঁর নিজের বাড়ীতে ফিরে গেলেন, কিন্তু শামুয়েল ইমাম আলীর অধীনে থেকে মাবুদের এবাদত-কাজ করতে লাগলেন।
12আলীর ছেলেরা ছিল ভীষণ দুষ্ট। মাবুদের প্রতি তাদের কোন মনোযোগ ছিল না। 13ইমাম হিসাবে লোকদের সংগে তাদের ব্যবহার ছিল এই রকম: কোন লোকের পশু-কোরবানীর গোশ্ত যখন সিদ্ধ হতে থাকত তখন ইমামের চাকর তিন কাঁটাযুক্ত একটা বড় চামচ নিয়ে আসত। 14সেটা দিয়ে সে হাঁড়িতে কিংবা গামলাতে কিংবা কড়াইতে কিংবা পাত্রে খোঁচা মারত এবং সেই কাঁটাতে যে গোশ্ত উঠে আসত তা সবই ইমাম নিজের জন্য নিয়ে যেত। বনি-ইসরাইলদের যত লোক শীলোতে আসত তাদের প্রতি তারা এই রকম ব্যবহারই করত। 15তা ছাড়া, চর্বি আগুনে দেবার আগেই ইমামের চাকর এসে যে লোকটি পশু-কোরবানী দিচ্ছে তাকে বলত, “আগুনে ঝল্সাবার জন্য ইমামকে গোশ্ত দাও। তিনি তোমার কাছ থেকে সিদ্ধ করা গোশ্ত নেবেন না, কাঁচা গোশ্তই নেবেন।”
16সেই লোকটি যদি বলত, “প্রথমে চর্বি পোড়াতে হবে, তারপর তুমি তোমার ইচ্ছামত গোশ্ত নিয়ে যেয়ো,” তবে সে বলত, “না, এখনই তা দিতে হবে; না দিলে আমি জোর করে নিয়ে যাব।”
17মাবুদের চোখে সেই যুবক ইমামদের গুনাহ্ভীষণ হয়ে দেখা দিল, কারণ তারা মাবুদের উদ্দেশে এই সব কোরবানীর জিনিসগুলো তুচ্ছ করত।
18ছোট ছেলে শামুয়েল কিন্তু মসীনা সুতার এফোদ পরে মাবুদের এবাদত-কাজ করতে থাকলেন। 19প্রত্যেকবার স্বামীর সংগে বাৎসরিক পশু-কোরবানী দিতে যাওয়ার সময় শামুয়েলের মা একটা ছোট কোর্তা তৈরী করে তাঁর জন্য নিয়ে যেতেন। 20তখন ইল্কানা ও তাঁর স্ত্রীকে দোয়া করে আলী বলতেন, “এই স্ত্রীলোকটি মাবুদের কাছে যে সন্তানকে দিয়েছে তার বদলে মাবুদ এই স্ত্রীর গর্ভে তোমাকে আরও সন্তান দিন।” এর পরে তাঁরা তাঁদের বাড়ী চলে যেতেন। 21মাবুদ সত্যিই হান্নাকে রহমত দান করলেন। তাতে হান্না গর্ভবতী হলেন এবং তাঁর মোট তিন ছেলে ও দুই মেয়ে হল। এদিকে ছোট শামুয়েল মাবুদের কাছে কাছে থেকে বড় হয়ে উঠতে লাগলেন।
22আলী তখন খুব বুড়ো হয়ে গিয়েছিলেন। বনি-ইসরাইলদের প্রতি তাঁর ছেলেদের সমস্ত ব্যবহারের কথা এবং যে সব স্ত্রীলোকেরা এবাদত-কাজের জন্য মিলন-তাম্বুর দরজার কাছে আসত তাদের সংগে তাদের জেনার কথা তাঁর কানে গেল। 23তিনি তাদের বললেন, “তোমরা এ কি করছ? তোমাদের খারাপ কাজের কথা আমি এই সব লোকদের কাছ থেকে শুনতে পাচ্ছি। 24না, না, আমার ছেলেরা, মাবুদের বান্দাদের যে সব কথা বলাবলি করতে শুনছি তা ভাল নয়। 25মানুষ যদি মানুষের বিরুদ্ধে গুনাহ্করে তবে আল্লাহ্তার মীমাংসা করতে পারেন; কিন্তু মানুষ যদি মাবুদের বিরুদ্ধে গুনাহ্করে তবে তার জন্য কে মিনতি করতে পারবে?” কিন্তু তারা তাদের বাবার কথায় কান দিল না, কারণ মাবুদ তাদের হত্যা করবেন বলে ঠিক করেছিলেন।
26ছোট ছেলে শামুয়েল বড় হয়ে উঠতে লাগলেন এবং মাবুদ ও মানুষের কাছে ভালবাসা পেতে থাকলেন।
27একদিন আল্লাহ্র একজন লোক আলীর কাছে এসে বললেন, “মাবুদ বলছেন, ‘তোমার পূর্বপুরুষেরা যখন মিসরে ফেরাউনের অধীন ছিল তখন তাদের কাছে কি আমি নিজেকে স্পষ্টভাবে প্রকাশ করি নি? 28বনি-ইসরাইলদের সমস্ত গোষ্ঠীর মধ্য থেকে কি আমি লেবীয়দের বেছে নেই নি, যাতে তারা আমার ইমাম হয়ে আমার কোরবানগাহের কাছে গিয়ে ধূপ জ্বালাতে পারে এবং এফোদ পরে আমার সামনে আসতে পারে? বনি-ইসরাইলদের সমস্ত পোড়ানো-কোরবানীর ভাগ কি আমি তাদের ও তাদের বংশকে দেই নি? 29তাহলে আমার ঘরে যে সব কোরবানী দিতে আমি হুকুম দিয়েছি তোমরা কেন সেই সব পশু-কোরবানী এবং অন্যান্য কোরবানীগুলোর অসম্মান করছ? আমার বান্দা বনি-ইসরাইলদের কোরবানীগুলোর সবচেয়ে ভাল অংশটুকু দিয়ে নিজেদের মোটাসোটা করে কেন তুমি আমার চেয়ে তোমার ছেলেদের বড় করে দেখছ?’
30“সেইজন্য বনি-ইসরাইলদের মাবুদ আল্লাহ্বলছেন, ‘আমি অবশ্য বলেছিলাম যে, তোমার ও তোমার পূর্বপুরুষদের বংশের লোকেরা চিরকাল আমার এবাদত-কাজ করবে’; কিন্তু এখন মাবুদ বলছেন, ‘তা আর চলবে না। যারা আমাকে সম্মান করবে আমি তাদের সম্মান করব এবং যারা আমাকে তুচ্ছ করবে তাদের তুচ্ছ করা হবে। 31দেখ, সময় আসছে যখন আমি তোমার বংশের ও তোমার পূর্বপুরুষদের বংশের লোকদের শক্তি এমনভাবে শেষ করে দেব যে, তোমার বংশে একটি লোকও বুড়ো বয়স পর্যন্ত বাঁচবে না। 32তুমি আমার ঘরের দুর্দশা দেখতে পাবে। বনি-ইসরাইলদের যত উন্নতিই আমি করি না কেন তোমার বংশের কেউ কখনও বুড়ো বয়স পর্যন্ত বাঁচবে না। 33তবুও তোমার বংশের সবাইকে আমি আমার কোরবানগাহ্থেকে ছেঁটে ফেলব না যাতে তাদের দরুন চোখের পানিতে তোমার দেখবার শক্তি নষ্ট হয় এবং তুমি অন্তরে যন্ত্রণা পাও; আর তোমার বংশের সমস্ত লোক যুবা বয়সেই মারা যাবে।
34“ ‘তোমার দুই ছেলে হফ্নি ও পীনহস একই দিনে মারা যাবে, আর সেটাই হবে তোমার জন্য একটা চিহ্ন। 35কিন্তু আমি আমার জন্য একজন বিশ্বস্ত ইমাম দাঁড় করাব, যে আমার মন বুঝে আমার ইচ্ছামত কাজ করবে। আমি তার বংশকে স্থায়ী করব এবং সে সব সময় আমার অভিষেক-করা বান্দার সেবা করবে। 36তোমার বংশের যারা বেঁচে থাকবে তারা এক টুকরা রূপা ও একটা রুটির জন্য তার কাছে এসে মাটিতে মাথা ঠেকিয়ে সালাম করবে এবং একটি ইমাম-পদ পাবার জন্য অনুরোধ করবে যাতে সে কিছু খেতে পায়।’ ”