১ করিন্থীয় 10

বনি-ইসরাইলদের ইতিহাস থেকে শিক্ষা

1ভাইয়েরা, আমি চাই যেন তোমরা জানতে পার, আমাদের পূর্বপুরুষেরা সবাই সেই মেঘের ছায়ায় ছিলেন এবং সবাই লোহিত সাগরের মধ্য দিয়ে গিয়েছিলেন। 2মূসার সংগে এক হবার জন্য মেঘ এবং সমুদ্রের মধ্যে তাদের সকলের তরিকাবন্দী হয়েছিল। 3-4 আল্লাহ্‌র দেওয়া সেই একই খাবার এবং সেই একই পানি তাঁরা সবাই খেয়েছিলেন। আল্লাহ্‌র দেওয়া যে পাথর তাঁদের সংগে সংগে যাচ্ছিল তা থেকেই তাঁরা খাবার জন্য পানি পেতেন; আর মসীহ্‌ই ছিলেন সেই পাথর। 5তবুও আল্লাহ্‌সেই লোকদের মধ্যে বেশীর ভাগ লোকের উপরে সন্তুষ্ট ছিলেন না। সেইজন্য তাঁদের লাশ মরুভূমিতে পড়ে রইল।

6আমরা যাতে দেখে শিখতে পারি সেইজন্যই এই সব ঘটেছিল, যেন তাঁরা যেমন খারাপ বিষয়ে লোভ করেছিলেন আমরা সেই রকম না করি। 7তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ যেমন মূর্তি পূজা করেছিলেন তোমরা তেমন কোরো না। পাক-কিতাবে লেখা আছে,

লোকেরা খাওয়া-দাওয়া করতে বসল,
পরে হৈ-হল্লা করে আমোদ-প্রমোদ করবার জন্য উঠে দাঁড়াল।

8তাঁদের মধ্যে অনেকে জেনা করবার ফলে একই দিনে তেইশ হাজার লোক মারা গিয়েছিলেন। আমরা যেন সেইভাবে জেনা না করি। 9তাঁদের মধ্যে অনেকে প্রভুকে পরীক্ষা করে যেমন সাপের কামড়ে মারা গিয়েছিলেন সেইভাবে আমরা যেন প্রভুর পরীক্ষা না করি। 10তাঁদের মধ্যে অনেকে বিরক্তি প্রকাশ করে যেমন ধ্বংসকারী ফেরেশতার দ্বারা ধ্বংস হয়েছিলেন সেইভাবে তোমরা বিরক্তি প্রকাশ কোরো না।

11অন্য লোকেরা যাতে দেখে শিখতে পারে সেইজন্যই তাঁদের উপর এই সব ঘটেছিল। আর আমরা যারা সমস্ত যুগের শেষ সময়ে এসে পড়েছি, সেই আমাদের সাবধান করবার জন্যই এই সব লেখা হয়েছে। 12এইজন্য যদি কেউ মনে করে সে শক্তভাবে দাঁড়িয়ে আছে তবে সে সাবধান হোক যেন পড়ে না যায়। 13মানুষের জীবনে যে সব পরীক্ষা হয়ে থাকে তা ছাড়া আর অন্য কোন পরীক্ষা তো তোমাদের উপর হয় নি। আল্লাহ্‌বিশ্বাসযোগ্য; সহ্যের অতিরিক্ত পরীক্ষা তিনি তোমাদের উপর হতে দেবেন না, বরং পরীক্ষার সংগে সংগে তা থেকে বের হয়ে আসবার একটা পথও তিনি করে দেবেন যেন তোমরা তা সহ্য করতে পার।

14এইজন্য আমার প্রিয় বন্ধুরা, তোমরা মূর্তিপূজা থেকে পালিয়ে যাও। 15তোমাদের বুদ্ধিমান জেনেই আমি এই সব কথা বলছি। আমি যা বলি তা তোমরা নিজেরা বিচার করে দেখ। 16মসীহের মেজবানীর সময়ে আল্লাহ্‌কে শুকরিয়া জানিয়ে যে দোয়ার পেয়ালা থেকে আমরা খাই, সেটা কি মসীহের রক্তের অংশ গ্রহণ করবার মত নয়? আর যে রুটি আমরা টুকরা করে খাই তাও কি মসীহের শরীরের অংশ গ্রহণ করবার মত নয়? 17আমরা অনেক হলেও একই শরীর, কারণ মাত্র একটাই রুটি আছে, আর আমরা সবাই সেই একটা রুটিরই অংশ গ্রহণ করি।

18ইসরাইল জাতির কথা চিন্তা কর। তাদের মধ্যে যারা কোরবানীর জিনিস খেয়ে থাকে তারা কি সেই কোরবানগাহের সব কিছুতে অংশ গ্রহণ করে না? 19আমার এই কথাতে কি এটাই বুঝা যায় যে, মূর্তির কাছে উৎসর্গ করা খাবার বিশেষ কিছু বা মূর্তি বিশেষ কিছু? 20তা নয়, বরং আমি বলছি, অ-ইহুদীরা যা উৎসর্গ করে তা আল্লাহ্‌র কাছে করে না, ভূতদের কাছেই করে। আমি চাই না যে, ভূতদের সংগে তোমাদের কোন যোগাযোগ-সম্বন্ধ থাকে। 21প্রভুর পেয়ালা আর ভূতদের পেয়ালা, এই দুই পেয়ালা থেকেই তোমরা খেতে পার না। প্রভুর টেবিলের উপরে আর ভূতদের টেবিলের উপরে যা আছে, এই দু’য়েরই অংশ তোমরা গ্রহণ করতে পার না। 22এটা করে কি আমরা সত্যিই প্রভুর দিলের জ্বালা জাগিয়ে তুলতে চাইছি? আমরা কি তাঁর চেয়ে বলবান?

ঈমানদারদের স্বাধীনতা

23কেউ কেউ বলে, “কোন কিছু করা হারাম নয়।” তা ঠিক, কিন্তু সব কিছুই যে মানুষের উপকার করে তা নয়। কোন কিছু করা হারাম নয় বটে, কিন্তু সব কিছুই যে মানুষকে গড়ে তোলে তা নয়। 24কেউ তার নিজের উন্নতির চেষ্টা না করুক বরং প্রত্যেকে অন্যের উন্নতির চেষ্টা করুক।

25বাজারে যে কোন গোশ্‌ত বিক্রি হয় তা খেয়ো; বিবেককে শান্ত রাখবার জন্য কোন কিছু জিজ্ঞাসা কোরো না, 26কারণ পাক-কিতাবের কথামত, “দুনিয়া ও তার মধ্যেকার সব কিছু মাবুদেরই।”

27যদি কোন অ-ঈমানদার তোমাদের দাওয়াত করে আর তোমরা যেতেও চাও, তবে বিবেককে শান্ত রাখবার জন্য কোন কিছু জিজ্ঞাসা না করে তোমাদের সামনে যা দেওয়া হয় তা খেয়ো। 28কিন্তু যদি কেউ তোমাদের বলে, “এটা মূর্তির কাছে উৎসর্গ করা হয়েছে,” তবে যে তা বলেছে তার জন্য আর বিবেকের জন্য তা খেয়ো না। 29আমি তোমাদের বিবেকের কথা বলছি না, অন্য লোকটির বিবেকের কথা বলছি। কিন্তু অন্য একজন লোকের বিবেকের জন্য কেন আমার স্বাধীনতায় হাত দেওয়া হবে? 30আমি যদি আল্লাহ্‌কে শুকরিয়া জানিয়ে খাই তবে যে খাবারের জন্য আমি শুকরিয়া আদায় করছি তার জন্য কেন আমার নিন্দা করা হবে?

31সেইজন্য তোমরা খাওয়া-দাওয়া কর আর যা-ই কর, সব কিছু আল্লাহ্‌র গৌরবের জন্য কোরো। 32-33 আমি যেমন সব মানুষকে সব রকমে সন্তুষ্ট করতে চেষ্টা করি তোমরাও তেমনই কর; অর্থাৎ ইহুদী বা অ-ইহুদী বা আল্লাহ্‌র জামাতের লোকদের পথের বাধা হয়ে দাঁড়ায়ো না। আমি নিজের উপকারের চেষ্টা না করে অনেকের উপকারের চেষ্টা করি যেন তারা নাজাত পায়।